বসুন্ধরার নামে চালের ব্যবসায় কারা?

বসুন্ধরা গ্রুপ বলছে, চালের ব্যবসায় তারা নেই। তাহলে এই নামে কারা বিক্রি করছে, তা বসুন্ধরা গ্রুপকেই খুঁজে বের করতে বলেছে প্রতিযোগিতা কমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2022, 02:05 PM
Updated : 28 Sept 2022, 02:05 PM

বাজারে বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের নামে চাল বিক্রি হচ্ছে, অথচ দেশের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্প গ্রুপ জানাল, এই চাল তাদের নয়।

বুধবার এই তথ্য জেনে প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেছেন, এই চাল কারা বিক্রি করছে, তা বসুন্ধরা গ্রুপকেই খুঁজে বের করতে হবে।

এদিন ঢাকার ইস্কাটনে প্রতিযোগিতা কমিশন কার্যালয়ে বসুন্ধরা গ্রুপসহ চাল, আটা, ডিম ও প্রসাধন সামগ্রী বিপণনের সঙ্গে যুক্ত আরও ছয়টি কোম্পানির আট ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

অস্বাভাবিক মূল্য বাড়িয়ে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টিসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে।

চালের ব্যবসায় যুক্ত হয়ে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগে কমিশন বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। আটা-ময়দার ব্যবসায় যুক্ত থাকার কারণে এসব পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলাও হয়।

শুনানিতে বসুন্ধরা গ্রুপের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান রেদোয়ানুর রহমান বলেন, চালের কোনো ব্যবসার সঙ্গে তারা যুক্ত নন। তাদের ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করে বাজারে মিনিকেট বা অন্য কোনো চাল কেউ বিক্রি করছে, এমন খবরও তাদের জানা নেই। কমিশনের শুনানিতে এসেই বিষয়টি তারা প্রথম জানতে পেরেছেন।

বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ আটা-ময়দার ব্যবসা পরিচালনা করে বলে শুনানিতে জানানো হয়।

রেদোয়ানুরের বক্তব্য শুনে কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন, বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করে কারা বাজারে চালের ব্যবসা করছে, সেটা খুঁজে বের করার দায়িত্ব বসুন্ধরা গ্রুপেরই।

কারা এই কাজ করছে এবং এর জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা ১৬ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে।

Also Read: বাজার থেকে মিনিকেট চাল কি উঠে যাবে?

Also Read: ‘অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি’: ৪৪ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা প্রতিযোগিতা কমিশনের

ওই দিন কমিশনে বসুন্ধরার আটা-ময়দার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মামলার শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ঠিক করা হয়েছে।

সম্প্রতি চালের বাজারে অস্থিরতার সুযোগে চিকন চাল প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে এক লাফে বেড়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় উঠে যায়। বিশেষ করে সুপার শপগুলোতে বিক্রি হওয়া ৫ কেজি, ১০ কেজি ও ২৫ কেজির ছোট প্যাকেটের ক্ষেত্রে প্রতি কেজির দাম উঠে যায় ৮০ টাকায়।

নিত্যপণ্যের বাজারে নানা রকম কারসাজি খুঁজতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গত অগাস্ট মাসে বেশ কয়েকটি পর্যালোচনা বৈঠক করার পরই মামলা করতে উদ্যোগী হয় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।

তাতে তারা বাজারে বসুন্ধরার ব্র্যান্ড নামে চাল দেখতে পাওয়ার পর এই শিল্প গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করে।

সাবান, সুগন্ধি সাবান ও গুঁড়া সাবানের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য স্কয়ার টয়লেট্রিজের বিরুদ্ধে কমিশনের করা মামলার প্রথম শুনানিও বুধবার অনুষ্ঠিত হয়।

স্কয়ারের আইনজীবী বিভূতি তরফদার কমিশনকে জানান, ২১ তারিখে নোটিস ইস্যু করা হলেও তারা সেটা অনেক পরে হাতে পেয়েছেন। সে কারণে শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি প্রস্তুত করতে পারেননি।

কমিশন স্কয়ারের মামলার শুনানির জন্য আগামী ২১ অক্টোবর পরবর্তী দিন ঠিক করে।
একইভাবে শুনানির জন্য নির্ধারিত অন্যান্য কোম্পানি এরফান গ্রুপের পক্ষে আইনজীবী জহিরুল ইসলাম, নারিশ পোল্ট্রির পক্ষে আইনজীবী শিহাব উদ্দিন, ডায়মন্ড এগের মহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান ও আইনজীবী এসএম শিহাব উদ্দিন কমিশনে উপস্থিত হয়ে সময় বৃদ্ধির আবেদন জানান।

এসব কোম্পানির পক্ষে কমিশন পরবর্তী শুনানির জন্য ভিন্ন ভিন্ন তারিখ ঘোষণা করে।