জাপানের সঙ্গে ইপিএ নিয়ে দরকষাকষি শুরু

এর আগে ইপিএ নিয়ে যৌথ সমীক্ষা হয়েছে, ডিসেম্বরে তা দুদেশের সরকার অনুমোদনও করেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2024, 01:02 PM
Updated : 12 March 2024, 01:02 PM

জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (ইপিএ) করার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত পর্যায়ের দরকষাকষির আলোচনা শুরু করেছে সরকার।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইপিএ নিয়ে আলোচনা শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, ইপিএ হলে বাণিজ্য ও শুল্ক ইস্যুর পাশাপাশি সেবা রপ্তানি, বিনিয়োগ, শুল্ক, বাণিজ্য সহজীকরণ, মেধাস্বত্ত্ব, প্রতিযোগিতার মত বিষয় থাকবে।

জাপানের সঙ্গে ইপিএ নিয়ে ইতোমধ্যে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে। এরপর গত ডিসেম্বরে যৌথ সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়; যা দুদেশের সরকার অনুমোদন করেছে।

মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হওয়ার পর এখন দুদেশের ট্রেড নেগোসিয়েশন কমিটি (টিএনসি) বৈঠক করে কার্যক্রম শুরু করবে।

জাপানের সঙ্গে ইপিএ সই হলে ২০২৬ সালের পরও দেশটির বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যাবে।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, “২০২৬ এর পরে গড়পড়তা ১৮% শুল্ক আমাদেরকে দিতে হবে, ওইটা যাতে না হয় সেটাই মূল উদ্দেশ্য।”

প্রতিমন্ত্রী টিটু বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটার পর শুল্কমুক্ত সুবিধা উঠে গেলে এই ধরনের অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তির প্রয়োজন পড়বে। জাপানের সঙ্গে সেটা নিয়ে আলোচনা শুরু করা হচ্ছে।

“এই চুক্তি হয়ে গেলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের বাইরে বিশ্ব বাজারেও জাপান-বাংলাদেশ একসঙ্গে প্রবেশাধিকার চাইতে পারবে।”

অনুষ্ঠানে জাপানের সঙ্গে ইপিএ’র প্রেক্ষাপটে তুলে ধরে বাণিজ্য সচিব বলেন, “স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানিকালে শুল্কমুক্ত-কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো অন্যতম।

“এর ফলে, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ঐ সকল দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে। ফলে ঐ সকল দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।”

এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্ভাব্য দেশগুলোর সঙ্গে অগ্রাধিকারভিত্তিক বাণিজ্যচুক্তি করার নীতিগত সিদ্ধান্তও সরকার নিয়েছে, বলেন সচিব।

তিনি বলেন, “আমরা সবসময় মনে করি, বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি করার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশ জাপান। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রতিশ্রুতিশীল, ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এবং আরও বাড়ার সুযোগ রয়েছে।”

তিনি বলেন, “জাপানি বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ যদি বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনে ঢুকতে পারে, তাহলে এটা বাংলাদেশের পণ্যের বহুমুখীকরণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে গেমচেঞ্জার হতে পারে।”

রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি অনুষ্ঠানে বলেন, ইপিএ কেবল শুল্ক কমানোর মাধ্যমে বাণিজ্যের প্রসার করবে না, কাস্টমস ছাড়ের প্রক্রিয়া ও ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি করার মাধ্যমে বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং বাংলাদেশের পণ্যের বহুমুখীকরণ করবে।

জাপানের সঙ্গে ইপিএ করার দরকষাকষি থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান নিয়ে বাংলাদেশ অন্যদের দেশের সঙ্গেও এ ধরনের চুক্তির আলোচনা কাজে লাগাতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।