ওমান থেকে বছরে আসবে ২৪ কার্গো এলএনজি

ঢাকায় চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী জানান, গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে পিএসসি হালনাগাদ করা হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2023, 03:29 PM
Updated : 19 June 2023, 03:29 PM

দীর্ঘমেয়াদে দেশে এলএনজির সরবরাহ বাড়াতে সরকারি পর্যায়ে ওমান থেকে বছরে ২৪ কার্গোর সমপরিমাণ পর্যন্ত এলএনজি আমদানি করা হবে; আগামী ১০ বছরে আনা হবে মোট ১ দশমিক ৫ এমটিপিএ (মিলিয়ন টন পার এনাম) এলএনজি।

সোমবার সন্ধ্যায় ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ এই এলএনজি কিনতে ওমানের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে পেট্রোবাংলা। প্রথম বছরে চার এবং পরের দুই বছর ১৬ কার্গোর পর ২০২৯ সাল থেকে এলএনজি আসবে ২৪ কার্গো করে বলে ঢাকায় চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

সোনারগাঁও হোটেলে জি টু জি ভিত্তিতে ২০২৬ সাল থেকে ১০ বছর মেয়াদে অতিরিক্ত শূন্য দশমিক ২৫ থেকে ১ দশমিক ৫ এমটিপিএ এলএনজি কেনার এ চুক্তি হয়। এতে পেট্রোবাংলার বোর্ড সচিব রুচিরা ইসলাম এবং ওমানের ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড (আগের নাম ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল) র নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী সই করেন।

গ্যাস স্বল্পতায় চাহিদা মেটাতে ২০১৮ সালে করা প্রথম চুক্তির আওতায় বর্তমানে ওমান থেকে বছরে এক এমটিপি (১৬ কার্গো) এলএনজি আমদানি করছে বাংলাদেশ।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ কাতার থেকেও দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় এলএনজি আনা হচ্ছে। এর বাইরে স্পট মার্কেট (খোলা বাজার) থেকেও এলএনজি কিনছে সরকার।

কাতারের সঙ্গে বিদ্যমান দুটি চুক্তির আওতায় ৩ দশমিক ৫ থেকে ৪ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।

সোমবার ওমানের সঙ্গে নতুন চুক্তির আওতায় এলএনজির ইউনিট মূল্য নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা তৌফিক ইলাহী বলেন, “দামের বিষয়টি প্রকাশ করতে পারব না, এটা আমাদের বিজনেস সিক্রেট। পৃথিবীর কোনো দেশে এ ধরনের চুক্তির ক্ষেত্রে দাম প্রকাশ করা হয় না।”

দর নির্ধারণ প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে ঢাকায় ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফ্ফার আলবুলুসি বলেন, “দামের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সিদ্ধান্ত। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই রাজনৈতিক নেতৃত্বের সুপারিশ ভূমিকা রেখেছে। আমরা বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা, দুই দেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে বিবেচনায় নিয়ে এই দাম ঠিক করেছি।”

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ওমানের সঙ্গে করা চুক্তির আওতায় এলএনজি আসা শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকে; ওই বছর আসবে চার কার্গো। এর পরের দুই বছর প্রতিবছর ১৬ কার্গো করে এবং ২০২৯ হতে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ২৪ কার্গো এলএনজি আনা হবে। সব মিলিয়ে ১০ বছর মেয়াদি এ চুক্তির আওতায় ১ দশমিক ৫ এমটিপিএর সমপরিমাণ এলএনজি আমদানি করা হবে।

বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে স্থাপিত দুটো ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে ৬ দশমিক ৫ এমটিপিএ এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ করার সুযোগ রয়েছে। এ হিসাবে আরও ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা যেতে পারে।

এছাড়া মহেশখালীতে তৃতীয় এবং পায়রায় একটি টার্মিনাল স্থাপনে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

ওমানের সঙ্গে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী চুক্তি বলেন, দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই এলএনজি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

একই সঙ্গে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের জন্য উৎপাদন বণ্টন চুক্তিকে (পিএসসি) হালনাগাদ করা হচ্ছে। এসময় তিনি ওমানসহ সংশ্লিষ্টদের আসন্ন পিএসসিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোঃ খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, ঢাকায় ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফ্ফার আলবুলুসি, ওকিউটি এর নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী বক্তব্য রাখেন।