খোলা চিনি প্রতি কেজির দর ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা করার সিদ্ধান্ত এসেছে।
Published : 10 May 2023, 05:43 PM
আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে দেশে চিনির দাম কেজিতে ১৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে, যদিও বাজারে এখনই এর চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের চিনির দাম বাড়ানোর কথা জানান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্য সচিবের কথা অনুযায়ী, বাজারে খোলা চিনি প্রতি কেজির দাম বেড়ে হবে ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজির দাম বেড়ে হবে ১২৫ টাকা।
তবে বাজারে এখনই এই দরে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। দুদিন আগেও ঢাকার কারওয়ান বাজারে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছিল কেজি ১৪০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি পাওয়াই যাচ্ছিল না।
সর্বশেষ গত এপ্রিলে চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তখন প্রতি কেজি খোলা চিনি ১০৪ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১০৯ টাকা করার ঘোষণা এসেছিল।
শুরুতে সে অনুযায়ী বিক্রি হলেও তারপর চিনির দাম বাড়তে বাড়তে এখন ১৪০ টাকায় উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ‘আমদানিকৃত খাদ্যের মান নিশ্চিতকরণে আমদানি নীতি আদেশ-২০২১-২০২৪ সম্পর্কে স্টেকহোল্ডারদের অবহিতকরণ’ বিষয়ক এক কর্মশালা শেষে বাণিজ্য সচিবের কাছে চিনির বাজার নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে তপন বলেন, কয়েকদিন আগে সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে দাম সমন্বয় করার অনুরোধ জানালে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়। ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী খোলা চিনি প্রতি কেজি ১২০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি ১২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই দামে চিনি বিক্রির জন্য বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স এসোসিয়েশনকে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
“তবে তারা আমাদেরকে এবিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি,” বলেন সচিব।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকেও সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, অ্যাসোসিয়েশনের দাবি ছিল দাম আরেকটু বেশি বাড়ানোর।
চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে গত মার্চে এক দফায় শূল্ক কমিয়ে আনার ঘোষণা দেয় সরকার, যা আগামী ৩১ মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
তবে আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থতি ঊর্ধমুখী হওয়ায় শূল্কছাড়ের এই সুবিধা আরও কিছু সময়ের জন্য বাড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সুপারিশ করা হবে বলে জানান সচিব।
“চিনির জন্য শুল্কহার এখনো বলবৎ রয়েছে। এটা ৩১ মে শেষ হবে। চিনির জন্য শুল্কহার অব্যাহত রাখার জন্য আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে চিঠি পাঠাব। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির মূল্য এবং ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চিনি আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হবে।”
চিনির বাজারে দামের অস্থিরতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে চিনির দাম একটু বেড়ে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মূল্য সমন্বয়ের নতুন সিদ্ধান্ত হাতে পেলেই তা কার্যকরে আবার অভিযান শুরু করা হবে।