লাগামহীন বাজারে চিনির দাম আবার বাড়ানোর তোড়জোড়

সরকার নির্ধারিত দামে চিনি মিলছে না কোথাও।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2023, 05:24 PM
Updated : 8 May 2023, 05:24 PM

সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেই দামে চিনি মিলছে না কোথাও; বাজারে প্রতিকেজি চিনিতে অন্তত ৪০ টাকা করে বেশি গুণতে হচ্ছে। অথচ এনিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ কিংবা বক্তব্য কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। এরমধ্যেই মিল মালিকরা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তুলেছে।

সোমবার ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এখন প্রতিকেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে কেজি ১৪০ টাকা দরে, সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লেখা থাকবে এমন প্যাকেটের চিনি পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও।

গত ৭ এপ্রিল সরকার প্রতি কেজি খোলা চিনি ১০৪ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনি ১০৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল। ওই সময়ের মধ্যে কোথাও কোথাও চিনির দাম প্রতিকেজি ১২০ টাকায় উঠলেও রোজার মধ্যে তা আবার কমে আসে। তবে দাম বাড়তে থাকে ঈদের পরপরই।

ঢাকার কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানি মো. নাঈম বলেন, ঈদের পর প্রতিদিন চিনির দাম বস্তায় ৫০/১০০ টাকা করে বাড়ছে। সকাল-সন্ধ্যা দামে হেরফের হয়ে যাচ্ছে অন্তত ৫০ টাকা করে।

“গতকাল সকালে চিনি কিনলাম বস্তা ৬ হাজার ৩৭০ টাকা, বিকালে কিনতে গেলাম তখন দিতে হল ৬ হাজার ৪০০ টাকা। কারওয়ান বাজারে এখন খুচরায় চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৪০ টাকায়।”

চিনির দাম আবার বাড়বে, এমন কথা শুনছেন বলে জানান নাঈমসহ কারওয়ান বাজারের দোকানিরা।

আনছার মাঝি জেনারেল স্টোরের একজন দোকানি বলেন, “কোম্পানির লোকজন বলছে, সরকার কয়েকদিনের মধ্যেই চিনির দাম ১৪০ টাকা হয়ে যেতে পারে।”

কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা আমিন জেনারেল স্টোরের একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, বাজারে এখনও চিনি পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম বেশি। প্রতি বস্তা চিনি এখন তিনি ৬ হাজার ২০০ টাকা করে বিক্রি করছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মিল মালিকরা প্রতিকেজি খোলা চিনি ১২৫ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন। তবে এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।

চিনির বাজার অস্থির হওয়ার কারণ জানতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বিভাগের মহাপরিচালক রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি। এবিষয়ে বাণিজ্য সচিবের কাছ থেকে জানতে চাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এরপর গত দুদিন ধরে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সঙ্গে মোবাইলে ও সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

চিনির বাজার অস্থির হওয়ার কারণ জানতে সিটি গ্রুপের বিপণন বিভাগের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা ও দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারাও সাড়া দেননি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুরো রোজার মাসে চিনির মূল্য নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার জন্য তারা অভিযান পরিচালনা করেন, তাতে ফলও পান।

“বিশ্ববাজারে মূল্য বৃদ্ধি বিবেচনায় সরকার চিনির মূল্য নতুন করে সমন্বয়ের একটি পদক্ষেপ নিয়েছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নতুন মূল্য নির্ধারণ হলে অধিদপ্তর তা কার্যকর করতে আবারও মাঠে নামবে।”