অর্থঋণ আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ৭২ হাজার ৭১২টি মামলা।
Published : 15 Nov 2023, 08:02 PM
অর্থঋণ আদালতে দায়ের হওয়া মামলা নিষ্পত্তিতে বেশি সময় লেগে যাওয়ার পেছনে বাদীপক্ষ হিসেবে মামলা পরিচালনায় ব্যাংকের দক্ষতার অভাবকে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পাঠানো এক নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, “অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলা যথাসময়ে সুদক্ষভাবে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সহকারে মামলা পরিচালনার জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।”
নির্দেশনায় বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন অর্থঋণ মামলার রায় ও আদেশ পর্যালোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, অর্থঋণ মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে, তাতে আমানতকারী ও তফসিলি ব্যাংক, উভয়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
“মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার পিছনে মামলায় সকল পক্ষ, বিশেষ করে বাদী ব্যাংকের সুদক্ষভাবে মামলা পরিচালনায় অনেক অবহেলা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।”
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, “অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলাসমূহ যথাসময়ে সুদক্ষভাবে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মামলাসমূহের ধার্য তারিখে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর সাথে যোগাযোগক্রমে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সহকারে মামলা পরিচালনার জন্য আপনাদেরকে পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।”
কোনো গ্রাহক ঋণ খেলাপি হলে তা অবলোপন করতে পারে বাণিজ্যিক ব্যাংক। অবলোপন বা রাইট অফ হচ্ছে মন্দ মানের ঋণকে ব্যাংকের স্থিতিপত্র থেকে (ব্যালেন্স শিট) বাদ দিয়ে পৃথক হিসাবে রাখা।
কোনো খেলাপি ঋণকে অবলোপনের আগে শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) কেটে রাখতে হয় মুনাফা থেকে। তার আগে মামলা দায়ের করতে হয় গ্রাহকের বিপরীতে।
তবে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত মন্দ মানের ঋণকে অবলোপন করতে মামলা দায়েরের প্রয়োজন হয় না। ঋণ অবলোপন করে পৃথক হিসাবে রাখা হলেও তা আদায়ের কার্যক্রম চলমান রাখতে হয়। তাতে ব্যাংকের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে খেলাপির পরিমাণ কম দেখানোর সুযোগ তৈরি হয়।
২০০৩ সাল থেকে ব্যাংকগুলোকে ঋণ অবলোপনের সুযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালতে দায়ের করা মামলার মধ্যে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে ৭২ হাজার ৭১২টি।
এসব মামালায় আটকা আছে এক লাখ ৭৮ হাজার ৭০১ কোটি টাকা। অর্থ লেনদন ও ঋণ সংক্রান্ত বিষয় বিশেষায়িত হওয়ায় এ খাতের মামলা নিষ্পত্তিতে অর্থঋণ আদালত গঠন করা হয়। পৃথকভাবে গঠিত এ আদালতের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।