মজুরি পুনঃনির্ধারণের দাবির পাশাপাশি পোশাক শ্রমিকদের ওপর ‘বলপ্রয়োগ’ ও মৃত্যুর ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
Published : 09 Nov 2023, 04:40 PM
পোশাক শ্রমিকদের যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তা বর্তমান বাজার দর ও অন্য দেশের মজুরি কাঠামো বিবেচনায় পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতি পাঠিয়ে এ দাবির পাশাপাশি পোশাক শ্রমিকদের ওপর ‘বলপ্রয়োগ’ ও মৃত্যুর ঘটনায় নিন্দা জানান তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, “শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় বলপ্রয়োগ ও কয়েকজন শ্রমিকের নিহত হওয়ার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। দমন-পীড়ন বন্ধ করে বর্তমান বাজারদর এবং অন্যান্য দেশের মজুরি কাঠামো পর্যালোচনা করে শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণ করার জন্যে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
“তা না হলে শ্রমিকদের অসন্তোষ ও মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন প্রশমিত হবে না। এর ফলে পুরো গার্মেন্টস সেক্টর ভবিষ্যতে আরও গভীর সংকটে পড়বে।”
দেশের পোশাক শিল্পের অবস্থা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, “তৈরি পোশাক শিল্প আমাদের দেশের প্রধান রপ্তানি খাত। অথচ এ শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকেরা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য মজুরির দাবি জানিয়ে আসছে।… সরকার শ্রমিকদের দাবি উপেক্ষা করে মালিকদের প্রস্তাব অনুযায়ী ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি চূড়ান্ত করেছে। বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে এই মজুরি যৌক্তিক নয়। এই মজুরিতে শ্রমিকদের পক্ষে পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।”
বিবৃতিতে স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে স্বাক্ষর করেন- নাজমুল হক প্রাধান, আমীরুল হক আমীন, শফি আহমেদ, আকতার সোবহান মাশরুর, সোহানুর রহমান সোহান, আমিনুল ইসলাম, বজলুর রশীদ ফিরোজ, সুজা উদ্দিন জাফর, মোশরেফা মিশু, মোখলেস উদ্দিন শাহীন, এম এ আওয়াল, বেলাল চৌধুরী, রাজু আহমেদ, সিরাজুম মনির, জাহেদ ইকবাল খান, সালেহ আহমেদ, কামাল হোসেন বাদল, রুহিন হোসেন প্রিন্স, রাগীব আহসান মুন্না, এস এম আকরামুল হক ও পারভেজ হাসেম।
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরে বেশ কিছুদিন ধরেই বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবি জানালেও মঙ্গলবার সরকার সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা করে, যা প্রত্যাখ্যান করেছে শ্রমিকদের একটি অংশ।
বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। বুধবার সংঘর্ষের মধ্যে এক শ্রমিকের মৃত্যুও হয়েছে।
সবশেষ বৃহস্পতিবারও নিয়মমাফিক কাজে যোগ দেওয়ার পর ফের সড়কে বেরিয়ে পড়েন গাজীপুরের বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা। এর পরপরই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উভয় পাশের পোশাক কারখানাগুলোয় একদিনের ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।