চিনিতে প্রভাব নেই সরকারি দামের

কয়েক সপ্তাহ ধরে কাঁচাবাজারে অস্বস্তি তৈরি করা চড়া মূল্যের সবজির দাম গত কয়েকদিনে কিছুটা কমে এসেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2022, 01:40 PM
Updated : 30 Sept 2022, 01:40 PM

অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপণ্য হিসেবে পাম তেল ও চিনির মূল্য সরকার নির্ধারণ করে দিলেও বাজার চলছে তার নিজস্ব গতিতে।

পাইকারি ও সরবরাহকারী কোম্পানির থেকে বেশি দামে কিনতে হওয়ায় খুচরায় চিনি বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দরে। তবে ব্যতিক্রমী তথ্য মিলেছে পাম সুপার তেলের দামে। সরকারি দরের চেয়ে অন্তত ১৫ টাকা কমে মিলছে এ ভোজ্যতেল। কারণ হিসেবে দোকানিরা পাম তেলের পড়তি দরের কথা বলছেন।

এদিকে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া মূল্যে বিক্রি হওয়া শাক সবজির দাম গত ৪/৫ দিনে কিছুটা কমে এসেছে, যাতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন কাঁচাবাজারে গিয়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন ক্রেতারা।

সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে বাজারে প্রতিকেজি খোলা চিনি ৮৪ টাকা এবং প্যাকেট চিনি সর্বোচ্চ ৮৯ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। একইভাবে পাম সুপার তেল প্রতি লিটার খুচরায় আগের সর্বোচ্চ ১৪৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩৩ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা।

তবে শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের মতই প্রতিকেজি খোলা চিনি ৯০ টাকা এবং প্রতিকেজি প্যাকেট চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে সুপার পাম তেলের সরকারি মূল্য নির্ধারণের চার দিনের মাথায় এসে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রতি লিটারে অন্তত ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে এ ভোজ্যতেল।

মিরপুর পীরেরবাগে মুদি দোকানি আল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গতকালও ৪৩৫০ টাকায় এক বস্তা চিনি কিনতে হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিকেজি খোলা চিনির ক্রয়মূল্য পড়েছে ৮৭ টাকা। তাই ৯০ টাকার নিচে বিক্রি করলে তাতে পোষাবে না।

Also Read: তেল চিনির দাম কমলো

Also Read: ‘সবজির বাজারেও হাত পোড়ার অবস্থা’

কারওয়ান বাজারের একাধিক মুদি দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাম তেলের দাম সর্বত্র কমতির দিকে। ফলে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও তারা কম দামেই তা বিক্রি করতে পারছেন।

গত এক সপ্তাহ ধরে পাম তেলের দর পড়তি জানিয়ে মুদি দোকানি রাশেদ রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কারওয়ান বাজারে প্রতিকেজি পাম তেল ১৩০ টাকা এবং প্রতি লিটার ১১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকার দাম ঠিক করে দেয় প্রতি লিটার ১৩৩ টাকা। অনেক দিন পর একটা পণ্যের দাম কমতে দেখে ভালোই লাগছে, হাসি মুখে বললেন তিনি।

দাম পড়ছে সবজির

সব ধরনের নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে কাঁচাবাজারেও বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে অস্বসিতে ছিলেন ক্রেতারা। অনেক বেশি দামে সবজি কিনতে হওয়ায় চাপে ছিলেন সীমিত আয়ের মানুষ। তবে সেই চড়া মূল্য গত ৪/৫ দিনে কিছুটা কমে এসেছে বলে কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতারা জানালেন।

তবে মিরপুরের মহল্লার বাজারে এখনও আগের মত চড়া মূল্যে কিনতে হচ্ছে সবজি। এদিন কারওয়ান বাজার ও মিরপুরের পাড়ার কাঁচাবাজারগুলোতে চিচিঙ্গা, ধুন্দল, শিম, বরবটি, ফুল কপি, বাঁধা কপিসহ অন্যান্য পণ্যের দামে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকার পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে।

কারওয়ান বাজারে পেঁপে প্রতিকেজি ২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, নতুন শিম ১০০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৪০ টাকা, কাকরল ৪০ টাকা কেজি, মূলা ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পটল ও ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, কচুমুখী ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা ও লাউ প্রতিটি ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

Also Read: বাজারে আবার আলোচনায় ডিমের দামবৃদ্ধি

Also Read: চাহিদায় হেরফেরে দাম বাড়ছে ডিম মুরগি আলুর

এ বাজারের সবজি বিক্রিতা আল আমিন ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এখন প্রতিকেজি ৫ থেকে ১০ টাকা করে কমেছে। কিছুদিন আগে গোল বেগুনের কেজি ১০০ টাকায় উঠে গিয়েছিল। এখন সেটা কমে ৬০/৭০ টাকায় নেমেছে। বেগুনের দামে বেশি ওঠানামা করেছে। অন্যান্য সবজির দামও সামান্য কমেছে।

আরেক সবজি বিক্রেতা বলেন, অগাস্ট মাসের শেষ দিক থেকে টানা বর্ষণের কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে গিয়েছিল। তখন দামটা বেড়ে গেছে। তাছাড়া এখন বর্ষা মৌসুমের সবজির আবাদ শেষের দিকে এবং শীতের সবজির ফলন শুরু হচ্ছে- এমন একটি অবস্থা। যে কারণে এ সময়ে সবজির দাম সাধারণত প্রতিবছরই বেড়ে যায়।