দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ প্রতিশ্রুতি দেন।
Published : 22 Apr 2025, 11:45 PM
বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ ও স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনালের জন্য কারিগরি সহায়তা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নবায়নে সম্মত হয়েছে কাতার।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি সফরে থাকা প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেশটির জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবি এর বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
ওই বৈঠকের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশটির জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশকে যথাসম্ভব সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন।
এখনই এমওইউ সই করতে আগ্রহের কথা তুলে ধরে তিনি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্ব দেন।
তিনি বলেন, তার দেশ গ্যাস উৎপাদন দ্বিগুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এতে এলএনজির দাম কমে আসবে।
“দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সবসময় সরবরাহ নিরাপত্তার জন্য সর্বোত্তম সমাধান।”
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে এলএনজির আমদানি চুক্তি (এসপিএ) নিয়ে করা আগের এমওইউয়ের মেয়াদ গত জানুয়ারিতে শেষ হয়। এটি নবায়ন করতে বাংলাদেশের তরফে অনুরোধ করা হলে কাতারের দিক থেকে প্রতিশ্রুতিও মিলেছে।
কাতারের রাজধানী দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এমওইউয়ের মেয়াদ সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রতিমন্ত্রী।
বৈঠকে কাতারের সহায়তায় বাংলাদেশের জ্বালানি সম্ভাবনাও খুঁজে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে তিনি বলেন, “আমাদের জ্বালানি খাত পুনর্গঠনের জন্য আপনার সাহায্যের প্রয়োজন।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাতার ও বাংলাদেশ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এলএনজি আমদানির একটি চুক্তি (‘সেল পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট’-এলএনজি এসপিএ) করে। ‘জি টু জি’ প্রক্রিয়ায় ১৫ বছরের জন্য বার্ষিক দেড় থেকে আড়াই মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানির ওই চুক্তি হয়। চুক্তির আওতায় বছরে ৪০ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে।
এরপর দ্বিতীয় এলএনজি এসপিএ স্বাক্ষরিত হয় ২০২৩ সালের জুনে। সে অনুযায়ী ১৫ বছরে আরও অতিরিক্ত দেড় মিলিয়ন টন (বার্ষিক) আমদানির কথা রয়েছে, যেটি কার্যকর হওয়ার কথা ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
এর আগে কাতারের আমিরের মা এবং কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেন মুহাম্মদ ইউনূস। কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারপারসন শেখ থানি বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানির সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
কাতার চ্যারিটির আন্তর্জাতিক অপারেশনস সেক্টরের সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নওয়াফ আবদুল্লাহ আল হাম্মাদির সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের বরাতে এসব তথ্য দিয়েছে বাসস।
চার দিনের সফরে মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার রাতে কাতারে পৌঁছান। পরদিন আর্থনা সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্মেলনের ফাঁকে তিনি বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন।
আরও পড়ুন-