“রোজা শুরুর দিন ৭৮০ থেকে ৭৯০ টাকা কেজি ছিল গরুর মাংস। এখন ৭৫০ টাকায় বিক্রি করছি।”
Published : 04 Mar 2025, 10:53 PM
রাজধানীতে চার দিনের মাথায় আগের দরে ফিরেছে মাংসের বাজার; কেজিতে ১০-২০ টাকা বেশি নেওয়ার অভিযোগ মিলেছে কেবল দেশি মুরগির ক্ষেত্রে।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোয় রোজার আগে প্রায় সব ধরনের মাংসের দাম বেড়ে গিয়েছিল। ওই সময় কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছিলেন ভোক্তারা।
মঙ্গলবার বিকালে মহাখালী ও নিকেতন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগির কেজি ১০ টাকা কমে ২০০ টাকা, সাদা লেয়ার আগের মত ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা ও লাল লেয়ারের কেজি ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়; আর দেশি মুরগির কেজি ছিল ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে।
নিকেতন কাঁচাবাজারের ‘রাজিব-মুক্তা পোলট্রির’ বিক্রেতা রাজিব হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মুরগির দাম রোজার আগে কিছুটা বেড়েছিল। এখন দেশি মুরগি ছাড়া সব ধরনের মুরগির দাম কমে আগের জায়গায় এসেছে। বাজারে সরবরাহও ঠিকঠাক আছে। সবমিলিয়ে দাম কমেছে।”
দেশি মুরগির চড়া দামের কারণ জানতে চাইলে এই বাজারের ‘বিসমিল্লাহ মুরগির দোকানের’ বিক্রেতা খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খাঁটি দেশি মুরগি কম পাওয়া যায়। দেশি যেটা বাণজ্যিকভাবে চাষ হয়, সেটা সাড়ে পাঁচশ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
“একেবারে গৃহস্থের পালা মুরগিটা কম পাওয়া যায়, এজন্য ওটার দাম বেশি। দেশি মুরগির কাছাকাছি স্বাদ সোনালি মুরগির। সেটার দাম আবার কিছুটা কম আছে।”
মহাখালী কাঁচাবাজারে মুরগি কিনতে আসা রাজিবুল ইসলাম বলেন, “রোজার আগের দিন লাল লেয়ার মুরগি নিয়েছিলাম ৩২০ টাকা কেজি দরে। আজ নিলাম ৩০০ টাকায়। দাম কমেছে।
“তখন একটু চাহিদা বেড়েছিল তো, এজন্য ব্যবসায়ীরা পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। এখন আবার চাহিদা কমেছে, তাই দামও কমেছে।”
এ দিন বাজারে গরুর মাংস রোজার আগের দিনের (শনিবার) তুলনায় ৩০ থেকে ৫০ টাকা কমে ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া খাসির মাথা আকৃতিভেদে প্রতিটি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, গরুর ভুঁড়ির কেজি ৩৫০ টাকা ও ‘ফ্যাঁপসা’ ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
নিকেতন কাঁচাবাজারের মাংস বিক্রেতা শুক্কুর আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোজার দিন ৭৮০ থেকে ৭৯০ টাকা কেজি ছিল গরুর মাংস। এখন ৭৫০ টাকায় বিক্রি করছি।”
এই বাজারের ‘বাদল মাংস বিতানের’ বিক্রেতা বাদল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খাসির মাংস রোজার পয়লা দিনও ১২০০ করে বিক্রি করেছি। আজ বিক্রি করছি ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা করে।
“দাম কমেছে। ফ্যাঁপসাও প্রথম রোজায় সাড়ে ৪৫০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। আজ বিক্রি করছি ৪০০ টাকা।”
মহাখালী কাঁচাবাজারে ‘আজমেরী মাংস স্টোরে’ থরে থরে খাসির মাথা সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতা জয়নাল হোসেন।
তিনি বলেন, “খাসির মাথা-মগজের আলাদা কাস্টমার আছে। অনেকেই নিয়ে যায়। ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করি। মাংসের দাম আর মাথার দাম দুটোই কমেছে। পয়লা রোজায় দাম বেশি ছিল।”
এই বাজারে গরুর মাংস কিনতে আসেন ওয়ারলেস এলাকার গৃহিণী রাবেয়া বেগম। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোজার প্রথমদিনে মাংস নিয়েছিলাম ৮০০ টাকা করে। আজ কিনলাম ৭৫০ টাকায়।
“ভোক্তা অধিদপ্তরকে আরও শক্তিশালী করা উচিত সরকারের। অধিদপ্তরেরও মনিটরিং বাড়ানো উচিত, যেন অসৎ প্রবণতা প্রতিরোধ করা যায়।”