“পিডিবির ডেবট-ইক্যুইটি রেশিও এখন ১১১: -১১ অর্থাৎ নেগেটিভ। নিজস্ব সম্পদ দিয়ে এখন ঋণ পরিশোধের অবস্থায় তারা নেই।”
Published : 23 Jun 2024, 09:31 PM
পাইকারি বিদ্যুতের একক ক্রেতা ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ঘাটতির চক্র রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে গেছে বলে এক বিশ্লেষণে দেখিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিডি।
রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ আয়োজিত এক সংলাপে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ‘জাতীয় বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত: প্রস্তাবিত উদ্যোগে সমস্যাগুলো কী বিবেচিত হয়েছে?’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
প্রতিবেদনে ছয়টি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এগুলো হল– উৎপাদনের ওভার ক্যাপাসিটি, লোডশেডিং, বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থার ধীর উন্নতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে কম গুরুত্ব আরোপ, জ্বালানি আমদানিতে অপারগতা এবং খাতগুলোর ধারাবাহিক লোকসান।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অব্যাহত সাবসিডি এবং বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পরও ২০২৫ সালের শেষে পিডিবির লোকসান ১৯৬ শতাংশ বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে।
এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সংক্রান্ত কারণে খরচ বাড়বে ২০ শতাংশ। বাকিটা ক্যাপাসিটি পেমেন্টসসহ অন্যান্য ‘নন রেভিনিউ রিলেটেড কস্ট’।
এখন যেভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে এবং সংস্কারমূলক যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সবকিছুর পরও এই ঘাটতি কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না বলেই সিপিডি মনে করছে।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “পিডিবির ডেবট-ইক্যুইটি রেশিও এখন ১১১: -১১ অর্থাৎ নেগেটিভ। নিজস্ব সম্পদ দিয়ে এখন ঋণ পরিশোধের অবস্থায় তারা নেই। এটাকে বলা হয় আর্থিক দেউলিয়াত্ব। এর গ্যারান্টর হিসাবে যদি সরকার না থাকত, এটা যদি কোনো স্বাভাবিক প্রতিষ্ঠান হত, তাহলে আর্থিক অবস্থার দিক থেকে একে দেউলিয়া হিসাবে বিবেচনা করা হত। পেট্রোবাংলার ক্ষেত্রেও এই ধরনের পরিস্থিতি রয়েছে।”
বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, এখন উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ত্রিশ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। এই ক্যাপাসিটি ২০৩০ সালেও বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে না।
“আমাদের হিসাবে তখন ১৯ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট হলেই হয়ে যাবে। এর সঙ্গে ২৫ শতাংশ রিজার্ভ মার্জিন ধরলে ২৩ হাজার ২৫২ মেগাওয়াট হলেই যথেষ্ট। সুতরাং এই মুহূর্তে আমাদের নতুন করে জেনারেশন ক্যাপাসিটি বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। বিশেষ করে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে তো নয়ই। বাজেটে কোনোভাবেই যেন জীবাশ্ম জ্বালানিকে উৎসাহিত না করে সেটাই আমাদের দেখার বিষয়।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৪ বছরে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এক লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎ থেকে কীভাবে বের হয়ে আসা যায়, বাজেটে তার একটি নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন ছিল।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক বলেন, “লোডশেডিংয়ের কারণ কী? একটা হচ্ছে জ্বালানি সংকট, আরেকটা হচ্ছে বিতরণ ও সঞ্চালন সক্ষমতা কম থাকা। কোনো মাসে ১১০০ মেগাওয়াট, কোনো মাসে ৬০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেড করতে হচ্ছে।”
বিদ্যুতের পাশাপাশি আমদানি নির্ভর জ্বালানি খাতও ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দেন গোলাম মোয়াজ্জেম।
তিনি বলেন, “ব্যয়বহুল হওয়ার পরও সরকার আমদানি চালিয়ে নিচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ক্রুড অয়েল আমদানি ১৪ শতাংশ বাড়লেও খরচ বেড়ে গেছে ৮০ শতাংশ। এর মানে, জ্বালানি আমদানি এখন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা আইটিএফসির কাছ থেকে সরকার ২১০ কোটি ডলারের ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের পেছনে খরচ হবে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।”
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, বুয়েটের পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, বাজেটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাতে কত টাকা রাখা হয়েছে সেটা নিয়ে কথা বলতে তিনি আগ্রহী নন।
“১৯৯৬ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে একটি নীতিমালা তৈরি করার পর এটা আর আপডেট করা হয়নি। এরপর অনেক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। সঠিক পলিসি ছাড়াই এ খাতে একের পর এক কৌশল নেওয়া হচ্ছে, বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখন আমাদের নতুন করে একটা জাতীয় পলিসি দরকার।”
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বিদ্যুতের উৎপাদন ২০ শতাংশ বাড়াতে ২০১৪ সালে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।
“পরবর্তী দুই বছর তারা ভর্তুকি বাবদ টাকা নিল, বিদ্যুতের দাম বাড়াল, কিন্তু উৎপাদন ১০ শতাংশও বাড়াতে পারল না। পরে আবার বলল, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেবে, সেজন্য আলাদা ট্যারিফ দিতে হবে। কিন্তু সেই অফার কেউ গ্রহণ করেনি।”
সরকারের প্রতিষ্ঠানিক দক্ষতার ঘাটতির উদাহরণ দিতে গিয়ে শামসুল আলম বলেন, চার্জিং স্টেশনের জন্য বিদ্যুতের দাম আলাদা। কেবল চার্জিং স্টেশনের খরচ বিদ্যুৎ বিভাগ প্রস্তাব করেছে ৫ টাকা ৫০ পয়সা, অথচ বিইআরসি সুপারিশ করছে ৫ টাকা ৬৮ পয়সা।
“প্রস্তাবকারীর চেয়ে সুপারিশকারী বেশি দাম বলে, এমন উদাহরণ এটাই প্রথম। তারা অনেক শব্দ উচ্চারণ করে, কিন্তু সেই শব্দের অর্থগুলো ভেতর থেকে অনুধাবন করে সে অনুযায়ী কাজ করার কোনো দৃশ্যমান উদাহরণ দেখা যাচ্ছে না। তা না হলে একটি চার্জিং স্টেশনের বাড়তি খরচ এত হয় কীভাবে? এটা কি লুণ্ঠন নয়?”
তিনি বলেন, “শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও শূন্য লোডশেডিংয়ের জন্য সরকারের যে লক্ষ্য ছিল, সেটা যদি বিবেচনা করি, তাহলে সিপিডির তথ্য অনুযায়ী এই দুটো লক্ষ্য অর্জনে সরকার শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে।”
বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বরাদ্দ নিয়ে আগ্রহ না থাকার কথা তুলে ধরে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, “স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বালানির মূল্যহার সমন্বয়ের কথা বলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুর্নীতি অ্যাডজাস্ট করেছে। বিপিসি দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। এভাবে কি জ্বালানি জাস্টিজ পাওয়া যাবে? ভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে যদি এভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়, তাহলে কী লাভ হবে এই বাজেট দিয়ে?
“আমি ধরে নিলাম পুরো বাজেটের ২০ শতাংশ জ্বালানি খাতে বরাদ্দ হবে। আমার তখন আতঙ্ক হবে যে, যত বড় বাজেট তত বেশি দুর্নীতি। দাম তত বেশি বাড়বে, তত বেশি ঘাটতি হবে, তত বেশি ভর্তুকি বাবদ যাবে।”
বাজেটে যে ২৯ হাজার কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য রাখা হয়েছে, তা বিদ্যুতের দাম কমাতে কতটা ভূমিকা রাখবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘লুণ্ঠন ব্যয়’ প্রতিরোধ না করা পর্যন্ত এই বরাদ্দ কোনো কাজে আসবে না।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সাময়িকী এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ বলেন, “বিপিডিবির টিকে থাকা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বকেয়া। আমার ধারণা ছিল যে বাজেটে একটা গাইডলাইন থাকবে যে, এমন ঘাটতি থেকে কীভাবে বেরিয়ে আসা যায়।”
গত বছর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত মিলে ৪১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় ৩১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি পেয়েছে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন। এবার এলএনজিতে সাত হাজার কোটি টাকা আর বিদ্যুতে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
“আমার পয়সায় সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে। উপরন্তু ভুল পরিকল্পনার কারণে যে বাড়তি খরচ সেটাও আমার ওপর চাপানো হচ্ছে। বিপিডিবির হিসাবে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ ১২ টাকা ১৩ পয়সা, আর পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে ৭ টাকা ০৪ পয়সা। লস হচ্ছে ৫ টাকা ৯ পয়সা।”
চলতি বাজেটের কিছু নতুন প্রস্তাবের সমালোচনা করে মোল্লা আমজাদ বলেন, এবার ফার্নেস অয়েলের ট্যারিফ ২৬৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৪৮০ ডলার করা হয়েছে। এর মানে হল, ফার্নেস বিদ্যুতের খরচ আরও বাড়বে।
“এই চাপটা পিডিবির ওপর যাবে। বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপিটাল মেশিনারিজ যেটা আমদানি করা হয়, সেটা করমুক্ত ছিল। এখানে ৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। এই দায়ও কিন্তু ঘুরে ফিরে বিপিডিবির ওপর পড়বে।
“আবার এবার বাজেটে ইনভার্টার এসির ট্যারিফ নন ইনভার্টার এসির চেয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। মানে হচ্ছে এনার্জি ইফিশিয়েন্সির ওপরও ট্যাক্স বসানো হয়েছে। বাজেটে এই ধরনের অনেক অ্যানোমালি রয়েছে “
বাজেট বক্তৃতা থেকে উদ্ধৃত করে মোল্লা আমজাদ বলেন, “অর্থমন্ত্রী সংসদে জানালেন, ১০ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের মত আরও ২৭টি প্রকল্প ২০৩০ সালের মধ্যে আসবে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে পুরোনো কেন্দ্র বাতিলের যে পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছিল, সেটা কিন্তু স্পষ্ট করা হয়নি। নো ইলেক্ট্রেসিটি নো পেমেন্ট আরেকটা ভয়াবহ ফাঁদ। এখানে ক্যাপাসিটি চার্জ থাকছে না ঠিকই, কিন্তু পরিচালন ব্যয় এত বেশি যে সেটা আরেকটা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে।”
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র সদস্য একে আজাদ বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে গ্যাসের মজুদ শেষ হয়ে যাবে। এখন ৩০ শতাংশ এলএনজি আমদানি করে নিজস্ব গ্যাসের সঙ্গে মেশানোর কারণে দাম বেড়েছে।
“গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ পাব বলে সরকার বলেছিল। আমরা মেনে নিলেও সরকার নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস বিদ্যুৎ দিতে পারেনি। এখনও গড়ে সাত থেকে আট ঘণ্টা ডিজেল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে হচ্ছে। বিভিন্ন সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নিয়ে বয়লার চালাতে হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য একটা বোঝা। আমিসহ অনেক কোম্পানি এখন বসে গেছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ২০ জুনের তথ্য তুলে ধরে ব্যবসায়ী আজাদ বলেন, আগের বছরের তুলনায় ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ইন্টারমিডিয়েট গুডস এর আমদানি কমেছে ১০ শতাংশ, শিল্পের কাঁচামাল কমেছে ২২ শতাংশ।
“আমাদের আমদানি ছিল ৮ বিলিয়ন ডলার, ডলার সংকটের কারণে সেটা ৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এবার যে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে, সেটা অর্জন করা সম্ভব নয় বলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলে দিয়েছেন। বর্তমান সক্ষমতায় ১৭ শতাংশ কম রাজস্ব আয় হয়েছে। এব ছর সেটা আরও কমে যাবে। কারণ আমদানি কমছে।
“বাজেটে সবচেয়ে বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে সরকারি খাতে। ২১ শতাংশ ধরা হয়েছে এস্টাবলিশমেন্ট কস্ট। পরিচালন ও অনুন্নয়ন ব্যয় হচ্ছে পাঁচ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। জনপ্রশাসন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ শতাংশ বা ২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এই ২ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকাই হচ্ছে আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু। যদি ধরি এনবিআর ৪ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করবে, সেখান থেকেই খরচ বহন করতে হবে। তাহলে পিডিবি বা পাওয়ার সেক্টরের জন্য যে ৩০ হাজার কোটি টাকা রেখেছি এই টাকা আদৌ দিতে পারব কিনা বলা যাচ্ছে না। রাজস্ব আয় করতে না পারলে এটা কীভাবে দেওয়া যাবে?”
আলোচনায় উঠে আসা বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের অনুষ্ঠানে উত্তর দেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন।
তিনি বলেন, “আজকে যদি আমাদের প্রাইমারি এনার্জির শক্তিশালী যোগান থাকত, তাহলে ওভার ক্যাপাসিটি, ক্যাপাসিটি চার্জ, পিডিবির লোকসান এই জিনিসগুলো আলোচনা করা লাগত না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের লোকজন থাকলে এসব বিষয়ে আরও স্পষ্ট উত্তর দিতে পারত।”
ওভার ক্যাপাসিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৩০ হাজার মেগাওয়াট হচ্ছে গ্রিড ক্যাপাসিটি। এ বছর আমাদের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট। এর বিপরীতে ডিপেন্ডবল ক্যাপাসিটি হচ্ছে ২০ হাজার মেগাওয়াট। এটা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কম নাকি বেশি তা ঠিক করার তেমন কোনো ফর্মুলা নেই। ভারতে রিজার্ভ মার্জিন ৭০ শতাংশ, জার্মানিতে প্রায় শতভাগ। আমাদের জ্বালানি মিশ্রণ বেশি রাখতে হচ্ছে বিধায় এখানে রিজার্ভ মার্জিন বেশি রাখতে হচ্ছে “
বিপিডিবির যে আর্থিক ঘাটতির কথা বলা হচ্ছে, তার পেছনে ক্যাপাসিটি চার্জের চেয়ে ডলারের বিনিময় হারের দায় বেশি বলে মত দেন মোহাম্মদ হোসেন।
তিনি বলেন, “বিভিন্ন কারণে দাম বেড়ে গেলে যেটা অ্যাডজাস্ট করা দরকার হয়, সেটা করতে পারছি না। আর লোডশেডিং যে বিষয়টা, সেটা হচ্ছে জ্বালানি সংকট ও সঞ্চালন লাইনের ব্যর্থতার কারণে।