বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো সংক্রান্ত দুটি সার্কুলার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 07 Feb 2022, 07:24 PM
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অর্থ সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চ এই রুল জারি করে।
সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা নির্ধারণ করে গত ২০ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করে এবং তা সংশোধন করে পরবর্তীতে ১ ফেব্রুয়ারি আরেকটি সার্কুলার দেওয়া হয়।
এ নির্দেশনায় ব্যাংকের জেনারেল (সাধারণ) শাখার কর্মকর্তাদের সর্বনিম্ন ৩৯ হাজার এবং ক্যাশ শাখার কর্মকর্তাদের সর্বনিম্ন ৩৬ হাজার টাকা বেতন-ভাতা দিতে বলা হয়।
এছাড়া শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের ন্যুনতম বেতন সাকুল্য ২৮ হাজার টাকা এবং ক্যাশ কর্মকর্তাদের ২৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ দুটি সার্কুলার চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন পুঁজিবাজারের ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগকারী ফরহাদ বিন হোসেন; যিনি সুপ্রিম কোর্টেরও আইনজীবী।
আদালতে তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম মাসুম ও সাইফুর রহমান রাহী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী সাইফুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বাণিজ্যিক ব্যাংকের বেতন-ভাতা নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করতে পারে কি না, সে বিষয়ে মতামত জানতে আদালত চারজন অ্যামিচি কিউরি নিয়োগ দিয়েছে।
এরা হলেন- অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি, রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও প্রবীর নিয়োগী।
সাইফুর বলেন, “নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাইভেট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনাগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। কিন্তু বেতন-ভাতার কাঠামো নির্ধারণ করে দিতে পারে না।”
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে ব্যাংক-কোম্পানি আইন- ১৯৯১ এর ৪৫(১)(ঘ) ধারার বিধান অনুযায়ী ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে তারা সার্কুলার জারি করেছে।
“কিন্তু তফসিলি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বেতন-ভাতা কাঠামো নির্ধারণে আদৌ বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করতে পারে কি না, সে বিষয়ে মতামত জানতেই রুল জারির পাশাপাশি আদালত চারজন অ্যামিচি কিউরি নিয়োগ দিয়েছেন,” বলেন সাইফুর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় শহরের সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োগ করা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা আলাদা করে দেওয়া হয়েছিল।
গত ২০ জানুয়ারি দেওয়া সার্কুলারে চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়।
পরবর্তীতে গত ১ ফেব্রুয়ারি সংশোধন করে দেওয়া সার্কুলারে আরও এক মাস সময় বাড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, চতুর্থ প্রজন্মের নতুন এবং দুর্বল দুই ব্যাংক ছাড়া আগামী এপ্রিল থেকে তা কার্যকর করতে হবে।