কোরবানির ঈদের মাত্র দুদিন বাকি থাকলেও তৈরি পোশাকের সব কারখানা শ্রমিকদের বেতন-বোনাসসহ পাওনা পরিশোধ করেনি বলে পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক জানিয়েছেন।
Published : 09 Aug 2019, 09:38 PM
মালিক ও পুলিশের তৎপরতার মধ্যে আগের দিন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে পাওনা আদায়ের জন্য বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
বিষয়টি স্বীকার করে শুক্রবার রুবানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার আগে শ্রমিকের বেতন-বোনাসের জন্য বিক্ষোভ, দর কষাকষির ঘটনা ঘটছে।
“তারা চেষ্টা করছেন যেন শতভাগ শ্রমিক তাদের পাওনা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন। এখনও অন্তত দুটি ফ্যাক্টরিতে বেতন বোনাসের সমস্যা রয়ে গেছে।”
এবছর বেতন-বোনাসে সমস্যা হতে পারে এমন ১৩০ কারখানা চিহ্নিত করেছিল বিজিএমইএ।
আগামী সোমবার বাংলাদেশে ঈদুল আজহা। এর আগে শনিবার পর্যন্ত কারখানায় সর্বশেষ কর্মদিবস।
শনিবারের মধ্যে সব কারখানার বেতন-বোনাসের সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।
তিনি বলেন, বেতন-বোনাস নিয়ে প্রতিবছর অসন্তোষ বা টানাপড়েন কোনোভাবেই কাম্য নয়। সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ঈদের পরে উদ্যোগ নেবেন।
ঈদের অন্তত ৫/৭ দিন আগেই শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের পক্ষে মত দেন মালিকদের এই নেতা।
বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করে মিরপুরের জারা জিন্স পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। পরে শিল্প পুলিশ, বিজিএমইএ ও মালিকপক্ষের প্রচেষ্টায় সমস্যার সমাধান হয়।
ওই দিন গাজীপুরের ফতুল্লার ভূইঘুর এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে জাজ এপারেলের শ্রমিকরা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখনও অনেক কারখানা শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করেনি। এবারও পাওনা আদায়ে শ্রমিকদেরকে অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ ও অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করতে হয়েছে।
গাজীপুরের চৌরাস্তায় স্টাইলক্রাফট, মল্লিক ফ্যাশন, সিসিলি গার্মেন্টস, রামপুরার ড্রাগন সুয়েটার, কুমিল্লার ড্রাগন সুয়েটার ও উত্তরার সুপারটেক্স কারাখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে মালিকপক্ষ বেতন পরিশোধ করেছে বলে তিনি জানান।
জলি বলেন, কিন্তু যেসব কারখানা সাব-কন্ট্রাক্টের ভিত্তিতে কাজ করে সেগুলোর বেতন-বোনাসের বিষয়টি আলোচনার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাবুল আকতার বলেন, “অন্য বছরের তুলনায় এবার বেতন-বোনাস পরিশোধের চিত্র কিছুটা ভালো। কিন্তু এর মধ্যেও অনেক স্থানে সংঘাত-সহিংসতা হয়েছে।”
শিল্প পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের পুলিশ সুপার রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি শ্রমিক অসন্তোষের মীমাংসা করেছেন। নতুন করে বেতন-বোনাস নিয়ে আর কোনো অভিযোগ আসেনি তাদের কাছে।