ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মন্ত্রীদের বৈঠক এবং গুদামে প্রশাসনের অভিযানের পর চড়তে থাকা চালের দাম কিছুটা কমলেও এখনও তা বাড়তিতে বিক্রি হচ্ছে।
Published : 06 Oct 2017, 07:32 PM
ঢাকার চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের চাপে চালের দাম একধাপ কমিয়ে থেমে গেছেন দেশীয় মিল মালিকরা। তবে আমদানি করা চালের দাম তুলনামূলক কম থাকায় বাজারে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।
শুক্রবার ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এখনও মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। আর পাইকারিতে এই চাল বিক্রি হচ্ছে ২৯০০ টাকায়।
ফলে মিনিকেটের খুচরা মূল্য দাঁড়াচ্ছে ৬০ থেকে ৬১ টাকা, আর পাইকারি মূল্য ৫৮ টাকা। কোরবানির ঈদের পর গুজব ও কারসাজিতে হঠাৎ চলের দাম বাড়ার আগে মিনিকেট বিক্রি হচ্ছিল প্রতিকেজি ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়।
বাজারের সর্বশেষ পরিস্থিতি যাচাই করে দেখা যায়, মিনিকেটর মতোই বিআর আটাশ ও পাইজাম বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। খুচরায় বিআর আটাশ ৫০ কেজির বস্তা ২৬০০ টাকা, আর পাইজাম ২৫০০ টাকা।
“তবে বাজারে ইন্ডিয়ান চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় মানুষ কিছুটা কম দামে মোটা চাল পাচ্ছে। ইন্ডিয়ান মোটা চালের ৫০ কেজির বস্তা এখন ২২৫০ থেকে ২৩০০ টাকা। ইন্ডিয়ান আটাশ চালও ২৩৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।”
কারওয়ান বাজারের সিটি জেনারেল স্টোরের একজন বিক্রয়কর্মী জানান, খুচরায় মিনিকেট কেজি প্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা, ভারতীয় আটাশ চাল ৪৭ টাকা, দেশি আটাশ চাল ৫৪ টাকা এবং ভারতীয় মোটা চাল (স্বর্ণা) ৫৪ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
উত্তর বাড্ডায় পাইকারি দোকান সাতারকুল রাইস এজেন্সির অন্যতম ব্যবস্থাপক বিপ্লব হোসেন বলেন, গত মাসের শেষ দিকে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা করে কমেছে। বিশেষ করে মিনিকেটের দাম কমেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে দাম স্থির আছে।
“সামনে আরও কমবে বলে শুনতে পাচ্ছি।”
কোরবানির ঈদের পর কয়েক দিনে চালের দাম বাড়ে অস্বাভাবিকভাবে। সরু চালের দাম খুচরায় কেজিপ্রতি ৭০টাকা পর্যন্ত ওঠে, সমানতালে বাড়তে থাকে মোটা চালের দামও।
এই প্রেক্ষাপটে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে চালকল মালিক, আমদানিকারক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
ওই বৈঠকে ব্যবসায়ীদের কয়েকটি দাবি সরকার মেনে নিলে মিল মালিকরা চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা কমানোর ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ভারত থেকে চাল আমদানির শর্ত শিথিল হওয়ায় আমদানিও শুরু হয়।
এ সময় কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে চালকল ও গুদামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলে। দীর্ঘদিন ধরে চাল গুদামে রাখায় অনেক ব্যবসায়ীকে জরিমানার পাশাপাশি হাজার হাজার বস্তা চাল জব্দ করা হয়।
রোপা আমন ওঠার আগে আর চালের দাম কমার সম্ভাবনা দেখছেন না নওগাঁ জেলার মৌসুমী অটো রাইস মিলের মালিক গোলাম মোস্তফা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দাম কমার আগে আমরা ২৯০০ টাকায় মিনিকেটের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি করতাম। এখন বিক্রি করি ২৭০০ টাকায়।”