বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচনে প্রধানমন্ত্রী যাবেন বলে আগের দিন আশপাশের মার্কেট বন্ধ থাকায় ব্যাপক বেচাকেনা হয়েছে ওই এলাকার ফুটপাতের দোকানে।
Published : 22 Jun 2017, 11:17 PM
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গুলিস্তান, পল্টন এলাকার ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়, ঈদে বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে এখান থেকে কেনাকাটা করেন অনেকে।
ঘরে ফেরার তাড়ার মধ্যেই কেউ কেনেন জামা-কাপড়, কেউ কেনেন জুতা, কেউ আবার নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র। বৃষ্টি না হওয়ায় রমরমা বিকিকিনি করতে পারায় সন্তুষ্ট ফুটপাতের বিক্রেতারা।
আর এতেই ঈদের বাজারে ‘কপাল খুলেছে’ বলে জানান তারা। গুলিস্তানের ফুটপাতের এই দোকানিরা বলেন, মার্কেট বন্ধ থাকায় দ্বিগুণ বিক্রি করতে পারছেন তারা।
গুলিস্তানে প্যান্ট-শার্ট-গেঞ্জির দোকানি আফতাব হোসেন দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মানুষ তো বাড়ি চলে যাওয়া শুরু করছে, যা কিনার এখনই কিন্যা নিতাছে। মার্কেট বন্ধ থাকায় বিক্রিটাও ভালোই হইতাছে। বৃষ্টিটা না আসলেই হয়।”
ওই এলাকায় ফুটপাতে ছোটদের কাপড় বিক্রেতা সাইফুল বলেন, “ব্যবসা তো এতদিন মন্দা ছিল, এখন পুরা হিট। মার্কেট বন্ধ আজ, যা বেচার বেচে নিতে হবে। আর এই শেষ সময়ে না বেচলে কবে বেচমু?”
পল্টন থানার ওসি রফিকুল ইসলামও একই কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের জন্য ১০ তলা নতুন ভবন হচ্ছে। গত বছর কাজ শুরু হয়ে এরইমধ্যে পাঁচ তলা উঠে গেছে। শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
গুলিস্তানের মতো পল্টন ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের ফুটপাতেও এদিন পাঞ্জাবি-পায়জামা, টুপি, আতর, তজবি, শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, জুতা, ছাতাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জমজমাট বেচাকেনা হয়।
“ঈদে টুপির চাহিদাটা বেশি থাকে, সবাই টুপি পরে। আমাদের হাজি টুপিটাই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দাম ১৫০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আমাদের দেশের লেইস টুপিগুলোর দাম সবচেয়ে কম। এগুলোর দাম ১০ টাকা। এছাড়াও আছে কুরুস কাটার টুপি।”
ঈদ করতে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে পথে স্বজনদের জন্য কিছু একটা কিনে নেওয়াদের দলের একজন ফারুক আহমেদ, নরসিংদী যাবেন তিনি।
বায়তুল মোকাররমের সামনের দোকান থেকে বাবা, দাদার সঙ্গে নিজের জন্যও টুপি কিনলেন তিনি।
টুপি ছাড়াও আতর, তজবিরও বেশ চাহিদা দেখা যায়। আতর কিনতে আসা মোহাম্মদ আলিম বলেন, “আতর বাবার খুব পছন্দের আর আমরাও তো আতর লাগিয়ে নামাজে যাই, তাই আতর কিনতে আসা।”
ঢাকার মিটফোর্ডের ‘লোকাল আতর’ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের আতর বিক্রি করেন আমজাদ আলী। সৌদি আরবের জান্নাতুল ফেরদৌস, সালমা, লাহোরের গোলে লালসহ নাজনীন, বেস্ট, নিভিয়াসহ বিভিন্ন নামের আতর রয়েছে তার সংগ্রহে।
কিশোরগঞ্জে উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে গুলিস্তানে কেনাকাটা করেন মর্তুজা হোসেন।
তিনি বলেন, “বাড়িতে চলে যাব একটু পরেই। এখানে জিনিসপত্রের দাম কম মনে হল, আর কিছু কেনাকাটাও বাকি ছিল। তাই কিনছি।”
ইদ্রিস বলেন, “আমগো ইনকাম কম। আর কামে ব্যস্ত থাকি, সময় থাকে না। যা বাকি থাকে প্রত্যেকবার এহান থেকেই কিনা বাড়ি যাই।”
গুলিস্তান, পল্টন ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন ব্যস্ত এলাকায় সড়কের পাশের ফুটপাতে চলছে ঘরমুখো মানুষের শেষ সময়ের কেনাকাটা। মিরপুর, ফার্মগেইটের ফুটপাতগুলোতেও এদিন ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়।