দেশে গত তিন বছরে রপ্তানিতে নন-কটনের অংশীদারত্ব ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
Published : 04 Mar 2024, 12:11 AM
পোশাক শিল্পের নন-কটন পণ্যে আগামী আট বছরে ১৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা গেলে এ খাতের রপ্তানি আয় প্রায় তিনগুণ বাড়ার সম্ভাবনার তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণা।
এতে বলা হয়েছে, নতুন এ বিনিয়োগ এলে বর্তমানের রপ্তানি আয় ১৫ বিলিয়ন থেকে ৪২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব।
পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলেছে, আগামী ২০৩২ সালের মধ্যে পোশাক রপ্তানি বর্তমানের ৪৭ বিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে তারা কাজ করছে। সেক্ষেত্রে রপ্তানির ঝুড়িতে কটন বা সুতির পণ্যের পাশাপাশি কৃত্রিম তন্তুর অংশিদারত্ব বাড়াতে হবে এবং বিশ্ববাজারে সেই সুযোগও রয়েছে।
বাংলাদেশে নন কটন পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে গত তিন বছর ধরে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি ফারুক হাসান। দায়িত্ব পালনের শেষ পর্যায়ে এসে সেই প্রচেষ্টায় কিছুটা ফলও পেয়েছেন তিনি।
রোববার উত্তরায় বিজিএমইএর কমপ্লেক্সে নন কটন পণ্যের সম্ভাবনার ওপর পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফল উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফারুক হাসান বলেন, গত তিন বছরে রপ্তানিতে নন-কটনের শেয়ার বা অংশীদারত্ব ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশে পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নন কটন খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের নন-কটন ফাইবার ও টেক্সটাইলের আমদানি বেড়েছে। অর্থাৎ আগামীতে এই টেক্সটাইল ও ফাইবার ব্যবহার করে তৈরি পোশাক রপ্তানি আরও বাড়বে।
“তবে কটন পোশাক থেকে আমরা মোটেও আমাদের দৃষ্টি সরাচ্ছি না, বরং কটন পোশাকের ক্ষেত্রে আমরা নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরির দিকটিতেও মনোযোগ দিচ্ছি।”
কৃত্রিম তন্তুর সম্ভাবনা খুঁজে দেখতে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান আইএফসির সহযোগিতায় ওয়াজির অ্যাডভাইজার্স লিমিটেড গবেষণাটি পরিচালনা করে।
গবেষণার সুপারিশে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০৩২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ নন কটন পোশাক রপ্তানিতে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ রয়েছে। ফলে ২০২২ সালে নন কটন থেকে যেখানে ১৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন রপ্তানি করেছে সেটাকে ৪২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া উচিত। প্রবৃদ্ধির এই পরিকল্পনা সাজাতে হবে নন কটন পণ্যের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে একটি কার্যকর ভ্যালু চেইন তৈরির মাধ্যমে।
এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাষ্ট্রকে নন কটন খাতের জন্য একটি ডেডিকেটেড পলিসি প্রণয়ন করা উচিত। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২০৩২ সালের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ১৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “আমরা যদি নন কটন খাতে সুযোগ কাজে লাগাতে পারি তাহলে একদিকে আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমবে, আমরা আরও কম্পিটিটিভ হতে পারব। স্থানীয় মূল্য সংযোজন বাড়াতে পারব ও কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারব।”
দেশি অনেক উপাদন থেকে নন কটন সুতা তৈরি সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী টেকসই কাঁচামাল সমাদৃত হচ্ছে, সেখানে আমাদের পাট, বাঁশ, ইত্যাদি বিকল্প তন্তুর সম্ভাবনাগুলো এগিয়ে নিতে হবে, যার বাজার সম্ভাবনা অনেক। ঝুট রিসাইক্লিং শিল্পেও বিনিয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।