“কর ছাড় আমরা যেটা দিয়েছি, সেটা জনস্বার্থেই দিয়েছি,” বলেন তিনি।
Published : 09 Dec 2024, 08:29 PM
নানা সময়ে বিভিন্ন পণ্য বা সেবায় যে কর ছাড় দেওয়া হয়ে থাকে, সেই সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
তিনি বলেছেন, “আমাদের কর ছাড়ের যে সংস্কৃতি, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে। এখান থেকে যদি বের হতে না পারি, তাহলে রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব না। সুতরাং আমাদের ডেভেলপমেন্ট পার্টনাররা- ওনারা যেটা বলছেন, সেটা আমাদের ভালোর জন্যই বলছেন।
“এটা আমরা সময় মতো অবশ্যই করব এবং আমরা শুরুও করেছি। ব্যাপারটা এমন না যে- আমরা বসে আছি, যেগুলা ইমিডিয়েটলি ক্যানসেল করা যায়- নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ছাড়া অন্যান্য যেসকল প্রোডাক্ট আছে, যেগুলোতে আমরা ইমিডিয়েটলি অ্যাকশন নিতে পারি; যেগুলোতে ইমিডিয়েটলি তুলে দিতে পারি, সেগুলা নিয়ে আমাদের কাজ শুরু হয়ে গেছে।”
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “আর পলিসি ডিসিশনের ব্যাপক প্রস অ্যান্ড কন্স আছে। আমরা সেগুলো আলাপ-আলোচনা করেই ঠিক করব যে- বিশেষ করে, আপনারা জানেন যে ১৯৯১ সালে ভ্যাট আইন হওয়ার পরে ২০১২ সালে নতুন আইন করলাম, বিষয়টা ইমপ্লিমেন্ট করা যায়নি।
“আমাদের ব্যবসায়ীদের আস্থায় এনেই করতে হবে। আমরা জোর করে চাপিয়ে দেব না। তবে মেসেজটা হচ্ছে এই- আসলে আমাদের একটা সিঙ্গেল ডিজিটের ভ্যাট রেট হলে ভালো হয়। তাতে যেটা হয়, লিকেজ অনেক কমে যায়।”
আবদুর রহমান খান বলেন, “জনস্বার্থে আমাদেরকে অনেক কর ছাড় দিতে হয়েছে। বিশেষ করে চিনি, সয়াবিন, চাল, পেঁয়াজ, আলু- এগুলোতে যে আমরা কর ছাড়টা দিয়েছি- ডিম, এর কারণে কিন্তু অবশ্যই আমাদের গত কয়েক মাসে ইনফ্লাশন কম হয়েছে।
“কর ছাড় আমরা যেটা দিয়েছি, সেটা জনস্বার্থেই দিয়েছি। এর মধ্যে আমরা কিন্তু অতিরিক্ত ছাড়ও দিয়েছি, এটা কিন্তু দেশের প্রয়োজনে- আমাদের রাষ্ট্রের স্বার্থে আমরা দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “কিন্তু যখনই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, তখনই আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে এবং আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি…যেই করগুলো যৌক্তিকীকরণ করা যায়, আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি।
“আপনারা হয়তো এটা দেখতে পাবেন। আমরা কয়েকটা এসআরও বাতিল করেছি, আরও কিছু এসআরও বাতিল করার প্রক্রিয়ায় আছে।”
আগামী ১০ ডিসেম্বর ভ্যাট দিবস এবং ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মলেনে ডাকে এনবিআর।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আদায় না হওয়া রাজস্ব পরের ছয় মাসে আদায় হবে মন্তব্য করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “জুলাই-অগাস্টে অর্থনীতি একটা সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে না পারায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন, জুলাই-অগাস্ট আন্দোলন ও ভোগ্যপণ্যে শুল্ক ছাড়ের কারণে কী পরিমাণ রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে?
জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘হিসাব করা হয়নি। এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের নিষ্ক্রিয়তা এ জন্য দায়ী। তারা নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছেন।’’
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে এনবিআর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ০৩ শতাংশ কম রাজস্ব আহরণ করতে পেরেছে, যেখানে আগের বছর একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
একক মাসের হিসাবে গত অর্থবছরের অক্টোবর থেকে চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে রাজস্ব আদায় শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ বাড়লেও চার মাসে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসা যায়নি।