ঢাকায় এখন প্রতি ডজন ডিম কিনতে ভোক্তাদের খরচ করতে হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা।
Published : 09 Sep 2024, 10:29 PM
দেশে ডিমের দাম লাগামহীন হয়ে যাওয়ার মধ্যে ভারত থেকে কিনে আনা হল প্রায় আড়াই লাখ ডিম।
রোববার যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে এই চালান বাংলাদেশে ঢোকে বলে জানিয়েছেন বেনাপোল শুল্কভবনের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান।
তিনি বলেন, এদিন ২ লাখ ৩১ হাজার ৪০টি মুরগির ডিম দেশে পৌঁছে। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ করে সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব খালাস করা হবে।
দেশে ডিমের দাম লাফ দেওয়ার পর সবশেষ গত বছরের ৫ নভেম্বর একটি চালানে ৬১ হাজার ৯৫০ টি মুরগির ডিম আমদানি করা হয়।
এই ডিম এনেছে ঢাকার ‘হাইড্রো ল্যান্ড সলুশান’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের পক্ষে চালানটি ছাড় করার জন্য বেনাপোল শুল্কভবনে কাগজপত্র দাখিল করে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজ।
রাতুলের প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ জানান, ১ হাজার ১০৪টি কার্টন এসেছে। প্রতি কার্টনে ২১০টি করে ডিম রয়েছে। ভারতের ‘শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ ভান্ডার' নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হয়েছে ডিমগুলো।
দেশে প্রতি ডজন ডিমের দাম এখন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। তবে ভারত থেকে আনা ডিমের দাম পড়েছে অনেক কম।
শুল্কায়ন ছাড়া এসব ডিমের দাম ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৭২ দশমিক ০৬ ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ লাখ ৪৮ হাজার ২৪৩ দশমিক ৯২ টাকার সমান।
এই হিসাবে প্রতিটি ডিমের দাম পড়েছে ৫ টাকা ৬০ পয়সা। এর ওপর ৩৩ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি হিসেবে যোগ হবে ১ টাকা ৮৪ পয়সা। এই হিসাবে প্রতিটি ডিমের আমদানি মূল্য পড়ে ৭ টাকা ৫০ পয়সার কাছাকাছি।
এর সঙ্গে পরিবহন খরচ ও পরিবহনের সময় নষ্ট হওয়া ডিম হিসাব করলেও বাংলাদেশে বাজার দরের তুলনায় কমে ডিমে বিক্রি করা সম্ভব বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
তবে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী আব্দুল লতিফ মনে করেন, এই একটি চালানের কারণে ডিমের দামে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।
তিনি বলেন, “ডিমের বাজারের অস্থিরতা নিরসনের জন্য আরও বেশি ডিম আমদানি দরকার।”
বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “আমদানিকারকের কাগজপত্র পেয়েছি। এখানে ডিম পরীক্ষার কোনো যন্ত্রপাতি নেই। ভারতীয় সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে এখান থেকে ডিমের ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হবে। তাছাড়া দৃশ্যমান কোনো সমস্যা থাকলে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।”
বেনাপোল শুল্কভবনের উপ-কমিশনার অথেলো চৌধুরী বলেন, “সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনের পর পরীক্ষণ করা হবে। এরপর ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হবে।”
২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ডিমের দাম লাফ দেওয়ার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা বেঁধে দিয়েও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। পরে ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।
সে সময় প্রতিটি ডিমের আমদানি খরচ পড়ে ৭ টাকার কিছু বেশি, যা দেশের বাজারদরের চেয়ে অনেকটাই কম ছিল। তবে যে পরিমাণ ডিম আমদানির অনুমতি ছিল, সে পরিমাণ ডিম দেশে আসেনি।