বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকানের বিক্রয় কর্মীরা জানান, শীতের শুরু থেকে মৌসুমি এসব যন্ত্রের বিক্রি এমনিতেই বেড়ে যায়। তবে গত কয়েকদিনের তীব্র শীতে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের অনেক ক্রেতাই আসছেন।
Published : 17 Jan 2024, 08:48 PM
হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু পুরো দেশ। আবহাওয়া অফিস বলছে, জানুয়ারির বাকি দিনগুলোতেও কাঁপাবে শীত। এমন সময়ে একটু উষ্ণতার জন্য বিশেষ করে ঘরের শিশু আর বয়স্কদের কথা ভেবে অনেকেই শীত তাড়ানোর যন্ত্রপাতির খোঁজে ভিড় করছেন ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকানগুলোতে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে গিজার, রুম হিটার, গরম বাতাসের ফ্যান, বৈদ্যুতিক জগ, ফ্লাক্স ইত্যাদি। ক্রেতারাও দরদাম করে পছন্দমত বেছে নিচ্ছেন এসব জিনিস।
সোমবার মোহাম্মদপুরে ওয়ালটন, বাটারফ্লাইসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমে রুম হিটার ও বৈদ্যুতিক জগ খুঁজছিলেন গৃহিণী আলেয়া ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা ও ছোট বাচ্চা আছে। গত কয়েকদিনের শীতে বারবার চুলায় গরম পানি করতে হয়েছে। এছাড়া রাতে শীতের তীব্রতায় ঘুমাতে পারেনি বাবা-মা। তাই এই দুটি জিনিস কেনা জরুরি হয়ে উঠেছে।”
সেখানেই কথা হয় পায়েল ও আবিরের সঙ্গে। নতুন এ দম্পতি সংসার সাজাতে নানান গৃহস্থালী জিনিস কেনাকাটা করতে বেরিয়েছেন।
তীব্র শীতের এ সময়ে গিজার, বৈদ্যুতিক জগ ও রুম হিটারের প্রয়োজন অনুভব করছেন তারা। যে কারণে কেনাকাটার তালিকায় ফ্রিজ উপরে থাকলেও আগে এসব সরঞ্জাম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
ডিসেম্বরে রাজধানীতে শীতের প্রকোপ তেমন টের পাওয়া না গেলেও জানুয়ারির শুরু থেকে শীত বাড়ছে। তাপমাত্রা যতটা কমছে তার চেয়ে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে নগরে। গত কয়েকদিন সূর্যের দেখাও মিলছে না অনেকটা সময়। হঠাৎ করে এমন ঠান্ডা বেড়ে বেচাবিক্রি বেড়েছে শীত কমানোর যন্ত্রপাতির।
বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকানের বিক্রয় কর্মীরা বলছেন, শীতের শুরু থেকে মৌসুমি এসব যন্ত্রের বিক্রি এমনিতেই বেড়ে যায়। তবে গত কয়েকদিনের তীব্র শীতে এবার চাহিদা বেড়েছে আরও বেশি। স্বল্প ও মধ্যম আয়ের অনেক ক্রেতার দেখা মিলছে।
দেশি ব্র্যান্ড ভিশনের আদাবর শোরুমের বিক্রয়কর্মী মেহেদি হাসান বলেন, গিজার, রুম হিটার, গরম বাতাসের ফ্যান, বৈদ্যুতিক জগ, ফ্লাক্সের মতো পণ্যগুলোর চাহিদা বাড়ে এ সময়ে।
ক্রেতা আকর্ষণের পাশাপাশি বিক্রি আরও বাড়াতে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ, কৃষি মার্কেট ও মিরপুরে ভিশনের শোরুমের বিক্রয় কর্মীরা বলছেন, গত কয়েকদিনে ঘর গরম রাখা কিংবা পানি গরম করার বিভিন্ন পণ্যের বিক্রি বেড়েছে বেশ। কয়েকটি শোরুমে কিছু পণ্য শেষও হয়ে গেছে।
শুধু এ ব্র্যান্ডের বিক্রয়কেন্দ্রে পণ্যের টানাটানি পড়েছে তা নয়, ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকসের কয়েকটি বিক্রয়কেন্দ্রেও রুম হিটার পাওয়া যায়নি।
ধানমন্ডিতে এ কোম্পানির একটি বিক্রয়কেন্দ্রের এক কর্মী বলেন, “স্টোরেও পণ্যটি শেষ হয়ে গেছে। ৩/৪ দিনের মধ্যেই আবার স্টক হবে। অনেক ক্রেতা রুম হিটারের জন্য এলেও এ মুহূর্তে দিতে পারছি না।”
আরেক দেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটনের মোহাম্মদপুর, জিগাতলা, অ্যালিফেন্ট রোড ও গুলশান আউটলেটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে রুম হিটার ও ফ্যান হিটার বেশি বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর শোরুমের একজন কর্মী জানান, গত দুই দিনে প্রায় ৩০টি ফ্যান হিটার বিক্রি হয়েছে। এ পণ্যে আছে ছাড়ও।
বাটারফ্লাইয়ের মোহাম্মদপুর ও কলাবাগান বিক্রয়কেন্দ্রের কর্মীরা বলেন, তীব্র শীত শুরুর পর থেকে তাদের বৈদ্যুতিক জগের সংগ্রহ শেষ হয়ে গেছে। চাহিদা বাড়ায় তিন আকারের গিজারের সংগ্রহ আনা হয়েছে।
ধানমন্ডির এবি ইলেকট্রনিকসে মিয়াকো, কনকা, নোভা ব্র্যান্ডের রুম হিটার বিক্রির তথ্য দিলেন কর্মীরা। আরও কয়েক ব্র্যান্ডের এ পণ্যের বিক্রিও প্রায় শেষের দিকে।
বিক্রয়কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপক সোহাগ রহমান জানান, গিজার, রুম হিটার ও বৈদ্যুতিক জগের প্রায় ৮০ শতাংশই বিক্রি হয়েছে গত কয়েকদিনে।
বাজারে ফ্যান হিটার ১৫০০ টাকা, বৈদ্যুতিক জগ ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকা, রুম হিটার ২৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা এবং গিজার ৮০০০ থেকে ১৬,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।