ঢাকায় এসে তিন গুণ দাম মানে বাজারে সমস্যা: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

এই সমস্যা চিহ্নিত হওয়ায় কাজ করতে সুবিধা হবে জানিয়ে টিটু বলেন, “একটু সময় পেলে আমরা দূরও করে ফেলব।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2024, 02:07 PM
Updated : 10 March 2024, 02:07 PM

কৃষক যে দরে পণ্য বিক্রি করে, তার থেকে ঢাকায় তিন গুণ দামে বিক্রি হওয়ার তথ্য জেনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, “তার মানে, বাজারে সমস্যা আছে।”

রোববার বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টাউনহল মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মত বিনিময়ের আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “খাদ্যপণ্য আমদানি হয়ে, কীভাবে ভোক্তা পর্যায়ে যাচ্ছে, সেটি বোঝার চেষ্টা করছি। আমি এই মুহূর্তে খবর নিলাম, এখান থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলে বস্তা ধরে প্রচুর লেবু বিক্রি হয়।

“সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয় টাকা প্রতিটি। আর এখানে এসে হালি ৬০ টাকা হয়ে যায়। পাঁচ টাকার একটা লেবু যদি ১০০ কিলোমিটার পথ পৌঁছাতে তিন গুণ হয়ে যায়, তার মানে আমাদের সমস্যা আছে।”

এই সমস্যা চিহ্নিত হওয়ায় কাজ করতে সুবিধা হবে জানিয়ে টিটু বলেন, “একটু সময় পেলে আমরা দূরও করে ফেলব।”

তবে সমস্যার রাতারাতি সমাধান হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। বলেন, “তিন ধরনের পণ্য আছে। এর মধ্যে একটা হল কৃষি পণ্য, যেটা কৃষি বিপণনের মাধ্যমে বাজারজাত হয়। কৃষি বিপণন নামে একটা অধিদপ্তর আছে। উপজেলা, জেলা, কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বাজার ব্যবস্থাপনাটা তাদের নেটওয়ার্কে আছে। আমরা এটাকে ঢেলে সাজাচ্ছি। আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় একটা বৈঠক করেছি। আমরা দায়িত্ব পেয়েছি দুই মাসও হয় নাই। আমরা রাতারাতি পরিবর্তন করতে পারব না।”

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “কৃষিপণ্যে দাম কমতে পারে, বাড়তে পারে। কিন্তু যেটা মিল থেকে দেওয়া হচ্ছে, সেটা তো পরিবর্তন হওয়ার কথা না। চিনি, তেল এই পণ্যগুলোর দামের ব্যাপারে আপনারা খেয়াল রাখবেন।”

বাজারে কাউকে ভয়-ভীতি দেখাতে আসেননি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী ব্যবসায়ীদেরকে বলেন, “আমরা এসেছি আপনাদের সহযোগিতার জন্য। আপনারা যেন কম দামে কিনে, কম দামে বিক্রি করতে পারেন, এই লক্ষ্যেই আমি আপনাদের ডেকেছি।

“এখানে (মোহাম্মদপুর টাউনহল মার্কেট) কীভাবে সহজে পণ্য পরিবহন করে নিয়ে আসতে পারি, সে ব্যবস্থা আমরা করব।”

‘খেজুর নিয়ে এত আলোচনার প্রয়োজন নেই’ 

বিদেশ থেকে নানা জাতের খেজুর আসে। এর মধ্যে বস্তায় ভরে যেগুলো আসে, সেগুলোর দাম কমেছে দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দামি যেসব খেজুর আছে, সেগুলো নিয়ে বেশি আলোচনার প্রয়োজন দেখেন না তিনি।

টিটু বলেন, “বিভিন্ন খেজুর বিভিন্ন জন, বিভিন্নভাবে আমদানি করে। তো আমরা শুধু একটা খেজুরের দাম কমাতে পেরেছি। যেটা বস্তায় করে আসে। এটা কিন্তু ২০০ টাকার নিচে বিক্রির জন্য আমরা বলে দিয়েছি।

“বিভিন্ন উঁচু জাতের খেজুর আজোয়া, মরিয়ম এগুলো কিন্তু সাধারণ মানুষ খাওয়ার সুযোগ পায় না। আমার মনে হয় না খেজুরটাকে নিয়ে খুব বেশি হাইলাইট করার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে।”

দায়িত্ব নেওয়ার দেড় মাসের মধ্যেই রমজান শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে এসব খেজুরের দাম কমাতে না পারার পেছনে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, “উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে তিন মাস লেগে যায়।”

পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে শিগগির

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখলেও বাংলাদেশে জন্য সীমিত পরিসরে পণ্যটি পাঠাতে যে অনুমোদন মিলেছে, সে সুবিধা শিগগিরই পাওয়া যাবে বলেও জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন। সেখান থেকে একটু কম দামে পেঁয়াজ আনব।

“আপনারা জানেন পেঁয়াজের দাম শুধু বাংলাদেশে না, কিছুদিন আগে আমি আবুধাবিতে গিয়েছি, সেখানেও দাম বেশি। পাকিস্তান কিন্তু গতকাল মধ্যপ্রাচ্যে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। ভারত একবারে বেশি দিতে পারবে না বলে টিসিবি না এনে ব্যবসায়ীদের নিজেদের আমদানি করে বাজারজাত করার অনুমতি দিয়েছি। রমজানের শুরুতে আপনারা এটি পেয়ে যাবেন।”

Also Read: কৃষিপণ্য: বিধিমালা কিতাবে রেখে ‘ভুল পথে’ বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা

Also Read: আলুর কেজি পাইকারিতে ২৬ টাকা, খুচরায় ৪৫ পর্যন্ত

Also Read: নিত্যপণ্য: উৎপাদন খরচের আড়াই গুণ দামকে ‘যৌক্তিক’ ভাবছে সরকার

Also Read: খুচরায় চালে কেজিতে ১০ টাকা, মাছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা

Also Read: গরুর মাংসে ‘অযৌক্তিক মুনাফা’ ১৫০ টাকা, হাত গুটিয়ে সবাই