সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ দুই-তিনশ টাকা কমে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
Published : 23 Aug 2023, 11:32 AM
বাজারে ইলিশের চড়া দাম নিয়ে হা-হুঁতাশের মধ্যেই সপ্তাহের ব্যবধানে দামের উত্তাপ খানিকটা কমেছে।
ঢাকার যাত্রাবাড়ী আড়তে মঙ্গলবার এক কেজি ওজনের ইলিশ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছিল ১৩০০ টাকায়, এক সপ্তাহ আগে যা ১৮০০ টাকা ছিল।
খুচরা বাজারে এই মাছ আগের সপ্তাহের চেয়ে দুই থেকে তিনশ টাকা কমে মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছে ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকায়। দাম খানিকটা কমায় বাজারে ক্রেতা সমাগমও বেশি।
ভরা মওসুমেও পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা না পড়ার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। সরবরাহ কম বলে গত কয়েকদিন ধরেই আড়তে ইলিশের দাম চড়া। খুচরা বাজারে এর প্রভাব আরও বেশি।
যাত্রাবাড়ী আড়তে দেড় কেজি ও তার চেয়ে একটু বেশি ওজনের ইলিশ মঙ্গলবার পাইকারিতে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। আর ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল ১০৫০ টাকায়। খুচরায় যা বিক্রি হচ্ছিল ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, ইলিশের সরবরাহ গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে যাত্রাবাড়ী আড়তে। এতে খুচরা বাজারে কিছুটা কমলেও দাম পুরোপুরি ‘স্বাভাবিক’ হয়নি। ইলিশের সরবরাহ আরও বেশি হলে দামে ‘স্বস্তি’ ফিরবে বলে মনে করেন তারা।
সাগরে ধরা মাছ বরফ দিয়ে পাঠানো হয় ঢাকার আড়তগুলোতে। সেই মাছের তুলনায় দীর্ঘ সময় ধরে ফ্রিজিং করা ইলিশের দাম খানিকটা কম।
ফ্রিজিং করা এক কেজি ওজনের ইলিশ মঙ্গলবার খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছিল ১১০০ টাকায়। এর চেয়ে একটু কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল ৯০০ টাকায়।
বড় ইলিশের সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে জাটকাও, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। আড়তে ৩০০ গ্রাম থেকে শুরু করে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের সরবরাহ এখন বেশি।
মঙ্গলবার যাত্রাবাড়ী আড়তের পাশেই খুচরা বাজারে বিক্রেতা হৃদয় চন্দ্র ফ্রিজিং করা এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১২০০ টাকা চাইলে অনেক দর কষাকষি পর ১০০ টাকা কমে কিনলেন ওয়াসিউর রহমান।
তিনটি মাছের দাম মেটানোর পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ওয়াসিউর বলেন, “দাম আরও কমব। মাছ বেশি থাকলেও এখনও খুব বেশি দাম কমায়নি ব্যবসায়ীরা। দাম বেশি চাওয়ায় আগে কিনিনি। এই সিজনে প্রথম কিনলাম।’’
এই বাজারে আসা আরেক ক্রেতা মঞ্জুরি বেগমের কাছে এক কেজি ওজনের ইলিশ দেড় হাজার টাকা চাইলেন বিক্রেতা দুলাল হোসেন। তবে দরদাম না মেলায় মাছ না নিয়েই ফেরত যান তিনি।
বিক্রেতা দুলাল তখন হাঁকডাকে বলছিলেন, “এর চেয়ে কম কেউ দিতে পারবে না।”
দুলালের কাছেই ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ টাকা কেজি দরে কেনেন ইব্রাহিম মণ্ডল। সাতটি মাছের দাম মেটান ১২৮০ টাকায়।
মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। এরপর থেকেই মূলত শুরু হয় ইলিশ ধরার মৌসুম।
সাগরে জেলেরা এখন ‘হতাশ’ হলেও মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, এখন তেমন পাওয়া না গেলেও কিছু দিনের মধ্যে ইলিশে ভরে উঠবে জেলেদের জাল।
গতবছর ইলিশের রেকর্ড উৎপাদন হয়েছিল দেশে। পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশের খাদ্য উপাদান রয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের চাঁদপুর নদী কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা গতবছর জানিয়েছিলেন, “আগামীতে জাটকার সুরক্ষা দিতে পারলে ইলিশ উৎপাদন সকল রেকর্ড ছাড়াবে।”
তবে সাগর উত্তাল থাকায় এ মৌসুমের শুরুতে জেলেদের জালে সেভাবে ধরা পড়েনি ইলিশ। যদিও মাঝে মাঝে কিছু ট্রলারে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ার খবর আসছে।
আরও পড়ুন-