Published : 28 Jun 2018, 03:24 PM
শীতলক্ষ্যা নদীর সাথে বহু খালের সংযোগ আছে। বর্ষাকালে এসব খাল যখন জোয়ারের পানিতে ভরে যায়, তখন খালে জমে থাকা কচুরিপানাগুলো ভাটির টানে আস্তে আস্তে নদীতে প্রবেশ করতে থাকে ৷
শীতলক্ষ্যা নদীর দু'পাড়ে জেলেরা জাল ফেলে মাছ শিকার করে। আবার মাছ ধরার জন্য বাঁশ-মূলি দিয়ে ঘোর বা চাক তৈরি করে রাখে। সেই ঘোরের বাঁশ-মূলির মধ্যে কচুরিপানাগুলে আটকে থাকে দিনের পর দিন৷ এই আটকে থাকা অবস্থায় কচুরিপানাগুলো বংশবৃদ্ধিও করে।
আবার বিভিন্ন খাল, বিল, ডোবা, নালা হতে খাল সংলগ্ন এলাকাবাসি এই খালের কচুরিপানাগুলো ঠেলে-ঠেলে নদীতে ভাসিয়ে দেয়। যার কারণে অকেজো হয়ে যাচ্ছে শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পাড়ের মানুষ পারাপার হওয়ার ঘাটগুলো ৷
কচুরিপানা ঠেলে অনেক কষ্টে খেয়াঘাটে এসে পৌঁছাতে হচ্ছে ট্রলারগুলোকে। আগে যেখানে মাত্র ৫ থেকে ৭ মিনিটে যাওয়া যেত, এখন কচুরিপানা ঠেলে যেতে সময় লাগবে অন্তত ১৫ মিনিট।
গতবছর ধরে শুরু হয়েছে নদীতে কচুরিপানার রাজত্ব। শীতলক্ষ্যা নদীতে কচুরিপানার এমন বিস্তার আগে কেউ দেখেনি। বর্তমানে কচুরিপানায় যেন জিম্মি করে রেখেছে এই শীতলক্ষ্যা নদীটিকে ৷
বড় বড় তেলের জাহাজ, বালুবাহী ট্রলারকেও ধীর গতিতে যেতে দেখা যায় ৷ সময় সময় এই কচুরিপানা ট্রলারের পাখায় আটকে যায়, এই আটকে যাওয়ার কারণে নদীর মাঝপথে ট্রলারের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে খেটে খাওয়া দিনমজুর নৌকার মাঝিদের অবস্থা আরও সংকটাপন্ন ৷ আগে একজন মাঝির দৈনিক আয় হতো তিনশ থেকে চারশ টাকা। এখন কচুরিপানা ঠেলে আগের মত আর তেমন আয় হয় না।
নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিত্তরঞ্জন গুদারাঘাট গিয়ে দেখা যায়, নদী পারাপারে নিয়োজিত থাকা নৌকাগুলোর চিত্র। দেখা যায়, একজন মাঝি অনেকবার চেষ্টা করেও তার নৌকাটিকে ঘাটে ভিড়াতে পারছেন না ৷
নৌকার মাঝি বললেন, "সারাদিনে চার-পাঁচটা টিপ মারলেই জান শেষ হয়ে যায়, তারপর নৌকা বন্ধ করে বাড়ি চলে যাই আর আসি না ঘাটের সামনে।"