নাগরিক সংগঠনগুলোর বিবৃতিতে উত্থাপিত ‘অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’, বলছে মন্ত্রণালয়।
Published : 13 Jan 2024, 10:17 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নতুন ভোটগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ছয়টি আন্তর্জাতিক নাগরিক সংগঠনের বিবৃতিকে জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শনিবার পাল্টা বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, আন্তর্জাতিক নাগরিক সংগঠনগুলোর বিবৃতিতে উত্থাপিত ‘অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’।
“অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিভিন্নদেশ ভূয়সী প্রশংসা করেছে এবং নতুন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য।”
৭ জানুয়ারির ভোটের পরিবেশের সমালোচনা এবং নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার যৌথ বিবৃতি দেয় এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন (এএনএফআরইএল), ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন (সিভিকাস), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ), এশিয়ান ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্ক (এডিএন), অস্ট্রেলিয়ার ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস নেটওয়ার্ক ও অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক (এডিপিএএন)।
এসব সংগঠনের যৌথ বিবৃতিকে “বিভ্রান্তিকর, একতরফা ও অগ্রহণযোগ্য” হিসেবে অভিহিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “গণতন্ত্র বিরোধী ও নির্বাচন বিরোধী শক্তি যারা নির্বাচনকে বানচাল করার অপচেষ্টা করেছিল তাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য এটি বিবৃতি উদ্দেশ্যমূলকভাবে জারি করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান।”
ওই বিবৃতির পাল্টায় মন্ত্রণালয় বলেছে, “বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, উৎসব মুখর পরিবেশে ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৫৩৪ জন প্রার্থী এবং ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
“এ নির্বাচনে কোনো কোনো জায়গায় বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ভোট প্রদানের হার ৭০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি ছিল। তবে শহর এলাকায় তুলনামূলকভাবে কম ভোটার উপস্থিতির কারণে সারাদেশে গড় ভোটের হার ছিল ৪১ দশমিক ৮ অর্থাৎ প্রায় ৪২ শতাংশ।”
স্বাধীন নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “নির্বাচনের আগে বিএনপির সহিংসতা এবং নির্বাচন বানচাল করার হুমকি সত্ত্বেও হাতে গোনা কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোটের দিনটি ছিল শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর।
“আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক, যারা সক্রিয়ভাবে মাঠ থেকে নির্বাচনের প্রতিবেদন করেছেন, তারা তাদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ার এর সত্যতা প্রকাশ করেছেন।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনকে সামনে রেখে সংযম এবং আইনি সীমানা মেনে সহিংসতার ঘটনাগুলোর মোকাবেলা করেছেন। রাজনৈতিক কারণে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
“নির্বাচন বানচালের জন্য যারা মানুষ ও যানবাহনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে, আগুন দিয়েছে, মানুষকে হত্যা ও আহত করেছে এবং জনজীবন ব্যাহত করেছে তাদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনের শাসন ঠিক রাখতে এবং সব নাগরিকের অধিকার রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপগুলি প্রয়োজনীয় ছিল।”