কুমিল্লার নানুয়া দিঘির সেই ইকবালের এক মামলায় সাজা

গাজীপুরের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় তার সাজা হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2023, 04:49 PM
Updated : 2 March 2023, 04:49 PM

দেড় বছর আগে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দিঘীর পাড়ে পূজামণ্ডপে কোরআন রেখে সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনায় অভিযুক্ত মো. ইকবাল হোসেনের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় সাজার রায় হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের কাছে ইকবাল দোষ স্বীকার করেন।

এরপর বিচারক গ্রেপ্তারের পর থেকে এ পর্যন্ত ইকবালের কারাভোগকেই সাজা হিসেবে রায় দেন।

সে হিসেবে তার এক বছর চার মাস সাজা হয় বলে আদালতের পেশকার শামীম আল মামুন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এদিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ছিল। মামলার বাদী টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই রাজীব হোসেনসহ পাঁচজন সাক্ষ্য দেন। ইকবাল হোসেনের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

“বিচারক তার কাছে জানতে চান, সাক্ষীদের জেরা করবেন কি না? তখন ইকবাল বলেন, ‘আমি আর কী জেরা করব স্যার, আমি আমার দোষ স্বীকার করছি, আমি অনুতপ্ত, আমি আর অপরাধ করব না’।

“এরপর আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এক বছর চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।”

এর আগে এ মামলার আরেক আসামি রোকন মিয়াও দোষ স্বীকার করেন; বিচারক তখনও ‘কারাভোগকেই’ তার সাজা হিসেবে রায় দিয়েছিলেন।

দুর্গাপূজা চলাকালে ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির পাড়ে একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। ওই ঘটনার সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দেশের আরও কয়েকটি স্থানে হিন্দু সম্প্রদায় আক্রান্ত হয়।

মণ্ডপে কোরআন রাখা ব্যক্তি হিসেবে ইকবালকে চিহ্নিত করার পর ওই বছরের ২১ অক্টোবর তাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ বলেছিল, এলাকাবাসী ইকবালকে ‘ভবঘুরে ও মাদকাসক্ত’ হিসেবে জানে। আর ইকবালের মা আমেনা বিবির ভাষ্য ছিল, তার ছেলে ১০ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন।

Also Read: গ্রেপ্তার ইকবালকে নেওয়া হয়েছে কুমিল্লায়

এদিকে কুমিল্লার ঘটনার পর ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ফেইসবুকে গাজীপুরের রোকন একটি পোস্ট দেন, যা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের টঙ্গী থানায় মামলা করে পুলিশ।

এসআই রাজীব হোসেনের করা সেই মামলা তদন্ত করে একই থানার এসআই অহিদ মিয়া আসামির তালিকায় রোকনের সঙ্গে ইকবালকেও আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়।

২০২২ সালের ২৯ জুন অভিযোগ গঠনের পর দুজনের বিচার শুরু হয় সাইবার ট্রাইব্যুনালে।