খালাত ভাইকে নিয়ে সেদিকে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী মনসুর হোসাইন, দুজনের লাশ পাওয়া গেল ভবনে বিস্ফোরণের পর।
Published : 07 Mar 2023, 10:29 PM
ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেটে খালাত ভাইর দোকানে এসেছিলেন আল আমিন। খালাত ভাই মনসুর হোসাইন তাকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। তার মধ্যে কাছের সিদ্দিকবাজারে ভবনে ঘটে বিস্ফোরণ। তারপর দুজনের লাশ পাওয়া গেল ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।
মঙ্গলবার রাতে মর্গে দুই ভাইয়ের লাশ দেখার পর কাওসার হোসাইন বিলাপ করছিলেন আর বলছিলেন, ‘মৃত্যুই যেন তাদের ডেকে নিয়েছিল’ সেখানে।
এদিন বিকালে সিদ্দিক বাজারে নর্থ সাউথ রোডের পাশে সাততলা একটি বাণিজ্যিক ভবনে ঘটে বিস্ফোরণ, তার ধাক্কায় আশপাশের ভবনের কাচ ভেঙেচুরে পড়ে। সড়কে থাকা একটি বাসসহ নানা যানবাহনও হয় ক্ষতিগ্রস্ত। পথচারীরাও হতাহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় সিদ্দিক বাজারের বিস্ফোরণ
‘মানুষ উড়ে এসে পড়েছিল রাস্তায়, গাড়ির ওপরও’
বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে যখন ওই ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে, তার খানিক আগেই ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেটের হাবিব বেডিং স্টোরে ছিলেন মনসুর (৪০) ও আল আমিন (২৩)। দোকানটি মনসুরদের, খালাত ভাইর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল আমিন।
কাওসার (২৮) বলেন, “আল আমিন দোকানে আসার পর কথা বলার এক ফাঁকে বড় ভাই আমাকে দোকানে রেখে তাকে নিয়ে বের হয়ে যান।”
এর একটু পরেই সিদ্দিক বাজারে ভবনে বিস্ফোরণের খবর শোনেন কাওসার। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোন দেন দুই ভাইকে। “কিন্তু কেউ ফোন ধরছিল না। বন্ধ পাচ্ছিলাম,” বলেন কাওসার।
দোকান বন্ধ করে তখন ছুটে যান বিস্ফোরণস্থলে। সেখানে গিয়েও কোনো খোঁজ না পেয়ে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে ছুটে যান কাওসার। সেখানেও ভাইদের না পেয়ে মর্গে ছুটে যান তিনি।
মর্গে লাশের সারিতে বেশিক্ষণ খুঁজতে হয়নি। দুই ভাইয়ের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন কাওসার।
দোকান থেকে বেরিয়ে আল আমিনকে নিয়ে মানসুর কেন সিদ্দিক বাজারের দিকেই গেলেন, তা উত্তর জানা নেই কাওসারের। “মনে হচ্ছে, মৃত্যুই যেন তাদের সেখানে ডেকে নিয়েছিল,” বলেন তিনি।
আল আমিনের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলায় পশ্চিম লালপুর গ্রামে। ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করছিলেন তিনি। মনসুর সপরিবারে থাকতেন ঢাকার যাত্রাবাড়ীর শেখদী পশ্চিম পাড়ায়।