এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
Published : 04 Feb 2024, 08:20 PM
বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ঘোষণার সঙ্গে স্মৃতিবিজড়িত নারায়ণগঞ্জের জিয়া হলের জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণ করে সেটিকে ‘৬ দফা ভবন’ করার দাবি জানিয়েছেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সম্পূরক প্রশ্নে শামীম ওসমান এই দাবি জানান।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শামীম ওসমান বলেন, “জাতির পিতা নারায়নগঞ্জে গিয়ে ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। সেটা বালুর মাঠ নামে একটি মাঠ ছিল। সেখানে ঘোষণা দেওয়ার পরে তিনি (বঙ্গবন্ধু) তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ওটার স্মৃতিকে ভুলিয়ে রাখতে নারায়ণগঞ্জ মিলনায়তন নামের একটি অডিটোরিয়াম করেন। আমরা বাধা দিয়েছিলাম, মার খেয়েছিলাম, আমাদের মধ্যে অনেকে জেলেও গিয়েছিল, কিন্তু আমরা ঠেকাতে পারিনি।
“তারপরে খালেদা জিয়া এসে সেটাকে আবার জিয়া হল নাম দিয়েছে। হাই কোর্ট থেকে, সুপ্রিম কোর্ট থেকে বলা হয়েছে যার (জিয়া) অবৈধ ক্ষমতা, তার একটা বিশাল ছবি টাঙ্গিয়ে, পাথরের মূর্তি ওখানে রাখা হয়েছে। এই জায়গাটি হচ্ছে জেলা প্রশাসকের অধীনে। নারাযণগঞ্জের মানুষের দাবি জাতির পিতার পদচিহ্ন ওখানে পড়েছিল, ৬ দফা আমাদের স্বাধীনতার সনদ ছিল।”
শামীম ওসমান স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর দৃষ্ট আকর্ষণ করে বলেন, “আমরা চাই ওখানে নারায়ণগঞ্জে আপনার তত্ত্বাবধানে, জেলা পরিষদের মাধ্যমে ওইখানে একটি ভবন হোক এবং সেই ভবনের নাম ‘৬ দফা ভবন’ রাখা হোক। এই ব্যাপারে আমরা একটি চিঠি আপনাকে দিলে আপনি দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করবেন কিনা?”
এরপর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, “বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সকল স্থান আমাদের সবার কাছে স্পর্শকাতর এবং মর্যাদার। রাজনীতির একজন কর্মী হিসেবে, জাতির জনকের আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে, আমরা যদি বঙ্গবন্ধুর কোনো বিষয়ে, কোথাও কোনো ন্যূনতম অসম্মান দেখি, সেটা অবশ্যই গোটা জাতি বরদাস্ত করবে না।
“…বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সে স্থানকে মর্যাদার জায়গার নেওয়ার জন্য যেকোনো পদক্ষেপ নেবেন, সেখানে আমি অগ্রণী ভূমিকা রাখব। যে বিষয়টি নিয়ে উনি কথা বলেছেন, সেটা নিয়ে আমি সমস্ত তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করব এবং যা যা দরকার, সে এলাকাতে বঙ্গবন্ধুর মর্যদাকে সম্মুন্নত করা এবং এলাকার মানুষের সার্বিক উন্নয়নের জন্য, অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এডিস মশা নিয়ন্ত্রনে ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ
চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালন বাজেটের আওতায় চলতি অর্থবছরে ডেঙ্গু মোকাবিলা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও প্রচার খাতে সিটি করপোরেশনগুলোর অনুকূলে ৪০ কোটি ও পৌরসভাগুলোর অনুকূলে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে জাতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী জেলা কমিটির জরুরি সভা আয়োজনসহ এডিস মশা নিধনে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সকল জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
“নির্দেশিনা অনুযায়ী সকল জেলা হতে কর্মপরিকল্পনা পাওয়া গেছে। ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় কমিটি এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কমিটির সভায় কর্মপরিকল্পনাসমূহ নিয়মিত আলোচনা করা হয়।”
১১ লাখ আর্সেনিক মুক্ত পানির উৎস স্থাপন করা হবে
নোয়াখালী-৩ আসনের মো. মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে গ্রামাঞ্চলে প্রায় ১০ লাখ ৬৫ হাজার আর্সেনিক মুক্ত পানির উৎস স্থাপন করা হবে। এ ক্ষেত্রে গভীর নলকূপ ছাড়াও পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানির সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং পুকুর খনন ও পুন:খননসহ সৌরচালিত পন্ড স্যান্ড ফিল্টার স্থাপন করা হবে। বর্তমানে যারা আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে তাদের হার শতকরা ৫-৬ ভাগে নামে আসবে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফের যৌথ জরিপ প্রতিবেদন মাল্টিপল ইনডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ ভাগ আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে।