গ্রেপ্তার সবাই একটি জেলার বাসিন্দা।
Published : 08 Nov 2022, 12:36 AM
প্রবাসী একজনের স্বজনের অভিযোগের সূত্র ধরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে বলছে, তারা বিভিন্ন জনের ‘ইমো’ একাউন্ট হ্যাক করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা সবাই একটি জেলার বাসিন্দা।
গত রোববার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন আব্দুল মমিন (১৮), রবিউল ইসলাম ওরফে রবি (১৮), শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদ (১৯), সাব্বির (১৮), চান মোল্লা (৩৫) ও আরিফুল ইসলাম (২৬)।
এই ছয়জনই স্কুলের গণ্ডিই পার হয়নি জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, “এই চক্রটি মূলত প্রবাসীদের টার্গেট করে এবং বিভিন্ন অ্যাপস হ্যাকড করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়।
“অন্য একটি জেলা থেকে লোক এসে এই চক্রটিকে টাকার বিনিময়ে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। প্রশিক্ষিত হওয়ার পর চক্রটি সুযোগ বুঝে প্রতারণা জন্য মাঠে নামে।”
এই চক্রের সন্ধান পাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে তারা এই চক্রের সন্ধান পান।
নুরুল ইসলাম পুলিশকে জানান, গত ৯ অক্টোবর তার কাতার প্রবাসী বড় ভাইয়ের ‘ইমো’ অ্যাপ থেকে তিনি একটি বার্তা পান। যেখানে লেখা আছে ‘আমার টাকার প্রয়োজন, আমি বিকাশ নম্বর পাঠালে টাকা দিও’। পরদিন আরেকটি বার্তা পান, যেখানে ‘আজকে বিকাশের রেট কত? ২৫০০০/= টাকা পাঠানো যাবে’ লেখা।
এভাবে আরও কিছু বার্তা পাওয়ার পর তিন দফায় তিনি ওই বিকাশ নম্বরে ৬৫ হাজার টাকা পাঠান বলে নুরুল ইসলাম গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।
এই টাকা পাঠানোর পর নুরুল ইসলাম ইমো অ্যাপে তার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি তার ভাইয়ের স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানতে পারেন, কয়েকদিন আগে তার ভাইয়ের ‘ইমো’ একাউন্ট হ্যাক হয়েছে।
খবরটি জেনে এরপরেই গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারি বিভাগ তদন্তে নেমে এই চক্রের সন্ধান পান বলে হারুন সংবাদ সম্মেলনে জানান।
“ছয়জনের এই তরুণ প্রতারক চক্রটি গত দুই মাসে একাধিক প্রবাসীর কাছ থেকে বিভিন্ন অ্যাপ হ্যাকড করে অন্তত ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।”
মধ্যপ্রাচ্যে যারা থাকেন তাদের অধিকাংশই এদেশের স্বজনদের সঙ্গে ইমো অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থাকেন জানিয়ে তিনি বলেন, “ফলে চক্রটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রবাসীদের টার্গেট করে থাকে।”
এই চক্রটিকে যারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে জানিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন বলেন, “সাইবার অপরাধীদের বিষয়ে আমরা সবসময় সক্রিয় থাকি এবং মনিটরিং করে থাকি।”
এ ধরণের হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষার জন্য কাউকে পিন কোড বা ওটিপি নম্বর না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।