রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানা দুরভিসন্ধি দেখতে পাচ্ছে সংসদে বিরোধী দলটি।
Published : 19 Feb 2024, 09:15 PM
মিয়ানমারে সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সংকট যে নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি করেছে, সেই পরিস্থিতিতে যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, “এ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ-ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। এই ব্যাপারে বাংলাদেশে আরও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে একটা যৌথ উদ্যোগ নেওয়া উচিত।”
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু’র বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে সোমবার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুল ইসলাম বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি থিংকট্যাংকে আলোচনার করার সময় বলেছেন, যে পরিস্থিতি এখন মিয়ানমারে আছে- এই পরিস্থিতির কারণে, বিশেষ করে রাখাইনের সাথে যে যুদ্ধ চলছে এর কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তা এবং ভারতের দুইটা দেশেই নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
“এই ব্যাপারে আমাদের আরও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক যেসব গোষ্ঠী আছে, যারা এখানে আছেন। বিশেষ করে ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চায়না এদের সাথে আমার মনে হয় এ বিষয়টা উপস্থাপন করা উচিত।”
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে লু বলেন, “মিয়ানমারের পরিস্থিতি পরিস্থিতি ভালো হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই শরণার্থী সংকট, যে নিরাপত্তা সমস্যা এটি বাংলাদেশের জন্য তৈরি করছে এবং ভারতের জন্যও করতে পারে। তা সামনের দিনগুলোকে আরও গভীর হতে পারে।”
সংসদে ‘পয়েন্ট অব অর্ডারে’ দাঁড়িয়ে বিরোধী দলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “এখানে যেটা দেখা যাচ্ছে, রাখাইনরা তাদের যুদ্ধ- আমাদের সীমান্তের উপর তারা ফোকাস করেছে। এইটার একটা কারণ হলো, যে সীমান্ত চৌকিগুলো আছে, এইগুলো বিচ্ছিন্নভাবে আছে, খুব সহজে তারা দখল করতে পারে।
“আরেকটা জিনিস হচ্ছে যে, তাদের এই যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাংলাদেশ যদি এর সাথে জড়িয়ে যায়, সেইখানে রাখাইনরা এইটার একটা অ্যাডভানটেজ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। কেবল সেটা না, দুই বছর আগে একটা ভিডিও গণমাধ্যমে এসেছিল- যেখানে কিছু রোহিঙ্গা মহিলাদেরকে এনে তারা ভিডিওটা নিয়েছে এবং যিনি প্রশ্ন করছিলেন, প্রশ্নটা ছিলো আপনারা কি মিয়ানমারের? তখন মহিলারা সাথে সাথে উত্তর দিয়েছে, ‘আমরা মিয়ানমার চিনি না, আমরা এখানে এবং এখানেই থাকব’।”
বিরোধী দলীয় উপনেতার ভাষ্য, “এই জন্য আমি জিনিসটা উপস্থাপন করলাম, কারণ এখানে অনেক রকম দুরভিসন্ধি আছে। এবং তখনকার কিছু ঘটনায় আমরা দেখেছি পাকিস্তানি নাগরিকরাও- এই মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা যারা এসেছে, সেই ক্যাম্পে তারা বেশ অ্যাক্টিভ ছিল এবং দুই-তিন জন ধরাও পড়েছিল।
রোহিঙ্গা সংকট ভারতেও নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি করতে পারে: ডনাল্ড লু
“সুতরাং আমি মনে করি বিশেষ করে যেহেতু কক্সবাজার আর মিয়ানমার পাশাপাশি এবং ১২ লক্ষ আমাদের এখানে রোহিঙ্গা বর্তমানে আছে। যার কারণে সেখানে সন্ত্রাস কিছু হচ্ছে, কিছু জঙ্গিবাদ উত্থান হচ্ছে। এইগুলো পরবর্তীতে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে বলে অনেকেই মনে করে, যেটা ডোলান্ড লু তার বক্তব্যে বলেছেন।”
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “তাই আমি বলব- এই ব্যাপারটা নিয়ে আমার মনে হয়, বিশেষ করে এখানে চারটি দেশ, ভারত ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ ভারতেরও নিরাপত্তা বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতে এইটার একটা ইমপ্যাক্ট হতে পারে।
“সুতরাং ভারত, আমরা, মিয়ানমার, চায়না এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এদের মধ্যে আমার মনে হয় একটা যৌথ উদ্যোগ নেওয়া উচিত এই জিনিসগুলো দেখার জন্য।”