“কক্সবাজার শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের সুযোগ আমার হয়েছিল। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির”, বলেন তিনি।
Published : 18 Feb 2024, 09:08 PM
মিয়ানমারে নতুন করে যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিস আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক এই কর্মকর্তা বলেন, “মিয়ানমারের পরিস্থিতি পরিস্থিতি ভালো হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই শরণার্থী সংকট, যে নিরাপত্তা সমস্যা এটি বাংলাদেশের জন্য তৈরি করছে এবং ভারতের জন্যও করতে পারে। তা সামনের দিনগুলোকে আরও গভীর হতে পারে।”
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যার মুখে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইন (আরাকান) রাজ্য থেকে বাংলাদেশে স্রোতের মত ঢুকতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। যেখানে আগে থেকেই ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ওই বছরের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে সইও করে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগও নেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি রোহিঙ্গারা, ভেস্তে যায় আলোচনা।
এরপর আসে কোভিড মহামারী, রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগেও ঢিল পড়ে। বিশ্বজুড়ে সেই সংকটের মধ্যেই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সামরিক জান্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আসে নতুন ‘বাধা’।
এখন মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের কারণে প্রত্যাবাসনের আলোচনা আপাতত বন্ধ, উল্টো রাখাইনে যুদ্ধের কারণে নতুন করে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সাত বছর আগে বাংলাদেশ সীমানা খুলে দিলেও এবার সরকার কঠোর অবস্থানে।
বাংলাদেশ ও ভারতকে ‘অংশীদার’ আখ্যা দিয়ে দেশ দুটিকে সক্ষম করে তোলার ওপরও জোর দেন ডনাল্ড লু। তিনি চাইছেন, অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হওয়া ছাড়াই যেন দেশ দুটি এই চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে।
‘দি ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ইন অ্যাকশন: দ্বিতীয় বার্ষিকী স্মরণে’ শীর্ষক আলোচনায় উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানকে দেখিয়ে তিনি বলেন, “১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ‘মহানুভবতা’ দেখিয়েছে। তাকে সহযোগিতা দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র অনেক সময় ব্যয় করে থাকে।
“কক্সবাজার শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের সুযোগ আমার হয়েছিল। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।”
রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং মিয়ানমার অস্থিতিশীলতার প্রভাব নিয়ে চিন্তায় অনেক সময় ব্যয় করান কথাও বলেন লু।