সিদ্দিক বাজারের ভবন মালিক দুই ভাইসহ ৩ জন রিমান্ডে

৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তাদের।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2023, 12:57 PM
Updated : 9 March 2023, 12:57 PM

পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের পর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা ভবনের মালিক দুই ভাইকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।

ভবন মালিক ওয়াহিদুর রহমান (৪৬) ও মতিউর রহমানের (৩৫) সঙ্গে গ্রেপ্তার ওই ভবনের একটি স্যানেটারি দোকানের মালিক আবদুল মোতালেব মিন্টুকেও (৩৬) রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে।

তিনজনকে বৃহস্পতিবার ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার আদালতে পাঠায় পুলিশ।

ডিএমপির অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনজনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল মাবুদ।

শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর মাহবুব আলম তাদের দুদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।

এই ভবনে বিস্ফোরণে ২১ জনের প্রাণহানির ঘটনায় পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে। এর বাইরে নিহতদের কেউ মামলা করতে চাইলে তা নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তিনজনকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এতবড় একটি দুর্ঘটনার দায় ভবনের মালিকসহ সংশ্লিষ্ট কেউ এড়াতে পারে না।

“ভবনটিতে কোনো সংস্কার হত না, পয়ঃনিস্কাশন নিয়মিত তদারকি হত না, পার্কিং এলাকায় গুদাম ভাড়া দেওয়ার নিষেধ থাকার পরেও দেওয়া হয়েছে, ব্যবসায়ীরা জেনেও নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সংস্থার তদারকিরও অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।”

এসব কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে হারুন বলেন, আর কারও সংশ্লিষ্টতা পেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

Also Read: সিদ্দিক বাজারে বিধ্বস্ত ভবনের দুই মালিকসহ গ্রেপ্তার ৩

সাততলা কুইন ভবনের মালিক ছিলেন রেজাউর রহমান। এক সময় তিনি ক্যাফে কুইন নামে একটি রেস্তোরাঁ খুলেছিলেন এই ভবনে, সেজন্য স্থানীয়রা ভবনটি ক্যাফে কুইন বিল্ডিং নামে চেনে।

রেজাউর অনেক দিন আগে মারা গেছেন। তিনি মারা যাওয়ার পর এখন তার তিন ছেলে এর মালিক। মশিউর রহমান নামে এক ছেলে দেশের বাইরে থাকেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ওয়াহিদুর এবং সবার ছোট মতিউর ঢাকায় থাকেন। তারাই ভবনের দেখাশোনা করেন।

বিস্ফোরণের পরদিন বুধবার দুই ভাই ওয়াহিদুর ও মতিউরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।

ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মো. জাফর হোসেন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, রাজউক, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করছে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি।

“তারা যদি প্রতিবেদন দেয় ভবনটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল, ভবন মালিকদের গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে যে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, সেই মামলাটিতে ধারা পরিবর্তন হবে।”