শিক্ষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
Published : 19 Jul 2023, 08:16 PM
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় করণের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনের মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে তা সম্ভব হবে না।
তবে শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবির প্রেক্ষিতে দুটি কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে আন্দোলনে থাকা শিক্ষকরা বলছেন, তাদের বিষয়টি নিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। তার আগ পর্যন্ত রাজপথেই থাকবেন তারা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে তারা এই কর্মসূচি পালন করছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “জাতীয়করণের সিদ্ধান্তের মধ্যে অনেকগুলো ইস্যু রয়েছে। কেননা আমাদের বহু রকমের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ন্যাশনাল কারিকুলামে বাংলা-ইংরেজি, বহু রকমের মাদ্রাসা, আন্তর্জাতিক কারিকুলামও বহুরকম। আবার সরকারি-প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি এমপিও-নন এমপিও প্রতিষ্ঠান। এগুলোর চাকরি ও যোগ্যতার শর্তও ভিন্ন ভিন্ন।
“সবকিছু মিলিয়ে এটাকে এক জায়গায় নিয়ে আসা একটা দুরূহ ও কমপ্লেক্স বিষয়। পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়া- মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে এতো সহজ নয়। আমরা শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে চাই এবং সেই সাথে শিক্ষকের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান করতে চাই।”
দীপু মনি বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা দুটি কমিটি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি কমিটি দেখবে বিভিন্ন ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ বা তাদের মান উন্নয়ন যেটা আমাদের মূল উদ্দেশ্য, যেন বৈষম্য না থাকে, সেই জায়গাটা দেখা। কারণ এটা গবেষণার বিষয়।
ক্লাসে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি, গভর্নিং বডিকে নজরদারির নির্দেশ
জাতীয়করণের দাবি: প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক আটকে শিক্ষকদের অবস্থান
“আরেকটি কমিটি দেখবে আর্থিক বিষয়টি। এর সাথে সরকারের বড় আর্থিক বিষয় রয়েছে। এখন এমপিও ও নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের বেতন, প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের বেতন, বৃত্তি, অবকাঠামোর উন্নয়ন- সবকিছুই কিন্তু সরকার দেয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন কিন্তু তাদের থাকে। আমরা পুরো আর্থিক বিষয়টা দেখার জন্য আরেকটি কমিটি করে দিচ্ছি। তারা গবেষণা করে দেখবেন।”
নির্বাচনের আগে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থায় এতো বড় বোঝা কাঁধে নেওয়া কোনো সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নির্বাচন সামনে আছে কিনা, আর্থিক অবস্থা কী- এসব কিছু না দেখে আমরা পুরো বিষয়টা কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে করা সম্ভব, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষকের মানোন্নয়নের বিষয়টি দেখার জন্য।”
সরকারকে নির্বাচনের আগে চাপ দেওয়া হয় জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনের আগে আন্দোলনের মৌসুম হয়ে যায়। যার যা কিছু আছে, ছোট-বড়, যৌক্তিক-অযৌক্তিক যা কিছুই থাকুক, তা নিয়ে মাঠে নামার একটা প্রবণতা থাকে। শেখ হাসিনার সরকারকে আসলে চাপ দেওয়ার কিছু নেই। শেখ হাসিনার সরকার জনস্বার্থে যা কিছু প্রয়োজন, স্বপ্রণোদিত হয়েই করে।
”আমরা চাই, আমাদের শিক্ষকদের যেন আন্দোলন করতে না হয়। তাদের যেন কোনো সমস্যা না হয় এবং তাদের যেন কেউ অন্যায়ভাবে ব্যবহার না করে।”
এদিকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমদ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৫ মিনিটের জন্য সাক্ষাৎ করে আমাদের বিষয়টি বলতে চাই। তার আগ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।”