তাদের এ কর্মসূচির ফলে প্রেস ক্লাব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র গরমে তৈরি হয়েছে দুর্ভোগ।
Published : 18 Jul 2023, 02:57 PM
সরকার পতনের দাবিতে বিএনপির পদযাত্রার মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের দুই পাশের সড়ক বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান নিয়েছেন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
তাদের এ কর্মসূচির ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র গরমে তৈরি হয়েছে দুর্ভোগ।
গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা তারা দিয়েছেন।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের এই শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে তারা এই কর্মসূচি পালন করছেন।
সোমবার বিএনপির পদযাত্রা ঘিরে এমনিতেই রাজধানীতে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সকাল ১০টায় রাজধানীর গাবতলী থেকে শুরু হওয়া এ পদযাত্রা মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর, মালিবাগ হয়ে গুলিস্তান গিয়ে পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার মোড়ে শেষ হবে।
একই দিন শোভাযাত্রার কর্মসূচি আছে আওয়ামী লীগেরও। বিকাল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ সায়েন্স ল্যাবরেটরি হয়ে কলাবাগান দিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাবে সেই শোভাযাত্রা।
সেই কর্মসূচির জন্য দুপুরের আগে থেকেই রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের সামনে জড়ো হচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘শান্তি ও উন্নয়ন শোভযাত্রা।’
এমন দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অস্থায়ী মঞ্চে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির নেতারা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শিক্ষক নেতারা ধারাবাহিকভাবে বক্তব্য রাখছেন। তারা তাদের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
মাধ্যমিক স্তরে ২০ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে ৬৮৪টি সরকারি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মাধ্যমিকে শিক্ষকদের সংখ্যা পৌনে তিন লাখ।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি বজলুর রহমান মিয়া বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা জাতীয় প্রে সক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।”
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার ফেনীর জি এ একাডেমির শিক্ষক কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের একটিই দাবি, মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করতে হবে।”
মাদারীপুরের হরিদাসদি মহেন্দ্রদি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, “মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।”
সকাল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করলেও সকাল ১১টার দিকে সড়কের দুই পাশই বন্ধ করে দেন শিক্ষকরা। এ সময় পুলিশ এসে সড়কের একপাশ সচল করার চেষ্টা করলে সেখানে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ১১টার পর থেকে দুই পাশের সড়ক দিয়েই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
টুঙ্গিপাড়ার গুয়াধানা সিলনা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সতিশ মন্ডল বলেন, “আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা আসুক। আশা করছি তিনি এই ঘোষণা দেবেন, কারণ তিনি মমতাময়ী।”
এই শিক্ষক জানান, সোমবার তাদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ চড়াও হওয়ায় মঙ্গলবার কিছু শিক্ষক ভয়ে প্রেস ক্লাবের আশপাশে অবস্থান নিয়েছেন। অনেক শিক্ষককে সচিবালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আশপাশের এলাকাগুলোতে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এখন এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান।
‘বৈষম্য’ নিরসনের দাবিতে এর আগে বেশ কয়েকবার আন্দোলন করেছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এখন পুরো মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণের দাবি তুলেছেন তারা।