শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির নজরদারি না থাকায় শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ ‘ক্ষুণ্ন হওয়ার’ কথা বলা হয়েছে মাউশির চিঠিতে।
Published : 18 Jul 2023, 09:14 PM
কোভিড মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে ওঠাসহ ও নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে চলতি বছর শ্রেণি কার্যক্রমে বিশেষ নজর দিতে বলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু সেই নির্দেশনার পরও ‘কতিপয় শিক্ষকের কার্যক্রমে’ হতাশা প্রকাশ করে পাঁচটি নির্দেশনা দিয়ে সবাইকে ‘দায়িত্বশীল আচরণ’ করতে বলেছে মাউশি।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরীর সই করা একটি চিঠি মঙ্গলবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির নজরদারি না থাকায় শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ ‘ক্ষুণ্ন হওয়ার’ কথা বলা হয়েছে সেখানে।
মাউশির চিঠিতে বলা হয়, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্য চলতি বছর থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন টিচিং-লার্নিং অ্যাপ্রোচে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নির্ভর করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন যেমন- প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি, শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সবার কার্যকর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা।
এর মধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বা গভর্নিং বডি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
দৈনন্দিন শিখন-শেখানো ও মূল্যায়ন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতে শিক্ষকের এবং তা পর্যবেক্ষণে প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিয়মিত উপস্থিতি অপরিহার্য উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, “কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কোনো কোনো শিক্ষক নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করছেন। পাশাপাশি এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডিরও কোনোরূপ নজরদারি না থাকায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
”এছাড়া এর আগে কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়নি। ফলে এখন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাসসহ গভীর নজর দেওয়া হচ্ছে।”
এদিকে সরকার পতনের দাবিতে বিএনপির পদযাত্রার মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের দুই পাশের সড়ক বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান নিয়েছেন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
গত ১১ জুলাই থেকে তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণার মধ্যেই মাউশির এমন নির্দেশনা এল।
এমন নির্দেশনা জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিনা জানতে উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরীকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
চিঠিতে আন্দোলনের বিষয়টি উল্লেখ না করেই ‘প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডিকে’ সক্রিয় তদারকির বলেছে মাউশি।
সেখানে বলা হয়, শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কার্যকর ভূমিকা পালন, কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণে গৃহীত বিশেষ ব্যবস্থা কার্যকর রাখা, সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে মিথ্যা ও উসকানিমূলক প্রচারে অংশগ্রহণ না করা এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এসব নির্দেশনা পালনে কোনো রকম ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছে মাউশি।
আরও পড়ুন
জাতীয়করণের দাবি: প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক আটকে শিক্ষকদের অবস্থান