“এই নির্বাচনে বড় একটি দল আসেনি, এর প্রেক্ষাপটও ভিন্ন। আমাদের সময়কার পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়,” বলেন তিনি।
Published : 07 Jan 2024, 11:01 PM
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘সুষ্ঠু হলেও প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
তিনি বলেছেন, “নির্বাচনটা যেরকম প্রতিযোগিতাপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়নি। কারণ একটি বড় রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। সেই দিক থেকে নির্বাচন যতটা প্রতিযোগিতাপূর্ণ বা অংশগ্রহণমূলক হওয়ার কথা ছিল,সেটা হয়নি।”
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ঘটনাপ্রবাহ, ফলাফল ও বিশ্লেষণ নিয়ে রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় সিইসির ভূমিকায় থাকা কে এম নুরুল হুদা এবারের নির্বাচনের মূল্যায়নে বলেন, “নির্বাচনের প্রক্রিয়া ভালো ছিল। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ভালো ছিল। কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে এবং গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে আমার মনে হয়… বিদেশি পর্যবেক্ষক দল জানিয়েছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।”
তবে বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণে ২০১৮ সালের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নুরুল হুদা বলেন, “তখন সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল। ৪০-৪২টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। এই নির্বাচনে বড় একটি দল আসেনি, এর প্রেক্ষাপটও ভিন্ন। আমাদের সময়কার পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়।”
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অধিকার ও উন্নয়নকর্মী খুশী কবির বলেন, “বাস্তবতা হচ্ছে, ইলেকশন হচ্ছে, সরকার ক্ষমতায় আসছে, এখন এটা একতরফা সরকার হতে পারে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় আছে, তাদের গ্রহণও করছে জনগণ। রাস্তায় আন্দোলন করে তাদের পতনও ঘটাচ্ছে না। কেউ তাদের বয়কটও করছে না।
“আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেউ তাদের নিজের পজিশন থেকে ছাড়ছে না। বিএনপির বক্তব্য হচ্ছে, এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে এটা আমরা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে দিচ্ছি। আমরা মনে করি যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে, তাদের অধীনে নির্বাচন করা যাবে না। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়।”
বিএনপি জনগণের জন্য রাজনীতি করছে কি না, সেই প্রশ্ন রেখে খুশী কবির বলেন, “প্রত্যেকেরই আলাদা একটা ম্যানিফেস্টো থাকে, আদর্শ থাকে।…ইলেকশনের সময় জনগণের কাছে যাওয়ার একটা সুযোগ। অন্য সময় এ সুযোগটা থাকে না।
“প্রত্যেকটা রাজনৈতিক ব্যক্তির এই সুযোগটা চলে আসে ইলেকশনের সময়। কিন্তু তারা নিজেরদের মানুষের কাছে থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। সুযোগটা তারা হাত ছাড়া করে।”
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব ও সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, নির্বাচনটা ‘ভালোই হয়েছে’ তিনি মনে করেন।
তারপরও নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমাদের সমন্বয় কমিটি নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে মূলত… অনেক সময় হয়কি, নির্বাচনকালীন কিছু বিশৃঙ্খলা করতে পারে। সেটি আমাদের প্রার্থীরা অবহিত করলে আমরা অবহিত করতে পারি। আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নেগেটিভ বিষয়গুলোই অবহিত করি।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামে নৌকার প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, “কেন প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে, আমরা তা খোঁজ নিয়েছি।
“নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘনের তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। সেটি তাকে অবহিতও করা হয়েছিল। সেটি তিনি না মেনে আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। সেজন্য ইলেকশন কমিশন মনে করেছে তার প্রার্থীতা বাতিল করা প্রয়োজন।”