পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি, ভাঙচুর করা হয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স।
Published : 20 Jan 2024, 06:36 PM
সিলেটের জৈন্তাপুরে গাড়ি খাদে পড়ে চার ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যুর পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর চালিয়েছে তাদের অনুসারীরা।
পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি, ভাঙচুর করা হয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স। চিকিৎসকদের বাসভবনের জানালার কাঁচও ভাঙা হয়েছে।
এ ঘটনায় চিকিৎসকদের পরিবারগুলো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বলে সিভির সার্জনের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
তামাবিল হাইওয়ে থানার ওসি মো. ইউনুস আলী জানান, শুক্রবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে সিলেট-তামাবিল সড়কের বাংলাবাজার ২ নম্বর লক্ষ্মীপুর বায়তুল জামে মসজিদের সামনে কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডোবায় পড়ে গেলে চারজন নিহত হন।
তারা হলেন: নিহাল পাল, জুবায়ের আহমদ সাব্বির, মেহেদী হাসান তামাল ও সুমন আহমদ। সবাই জৈন্তাপুর উপজেলার বাসিন্দা। তারা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকলেও কোনো পদপদবিতে ছিলেন না।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, চারজনের চিকিৎসা ঠিকমতো হয়নি অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
“দুর্ঘটনার পর তাদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে তাদের মৃত হিসেবে পান। তবে তাদের ‘ডেথ ডিক্লেয়ার’ করার জন্য একটি ইসিজি করা হয়। ওই হাসপাতালের ইসিজি যন্ত্রটি তখন বিকল ছিল।
“তাদের অনুসারী-বন্ধুরা অ্যাম্বুলেন্স চাইলে হাসপাতাল থেকে তা দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এসব নিয়ে ‘চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ’ তুলে হাসপাতাল কমপ্লেক্সে ভাঙচুর চালান তারা।”
ওসি জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এ বিষয়ে মামলা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সিলেট জেলা সিভিল সার্জনের নম্বরে ফোন করা হলে সেটি ধরেন ওই দপ্তরের মেডিকেল অফিসার (সমন্বয়) আহমদ শাহরিয়ার। তিনি বলেন, “দুর্ঘটনার পর চারজনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত অবস্থায় আনা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে কিছু লোকজন জৈন্তাপুর উপজেলা হাসপাতাল এবং সংলগ্ন চিকিৎসকদের আবাসিক এলাকায় ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালান।
“সেখানে তিনজন চিকিৎসক তাদের পরিবার নিয়ে থাকতেন। তাদের বাসায় বয়স্ক বাবা-মায়েরাও ছিলেন। হামলার সময় তারা বারবার ফোন করছিলেন, তাদের বাঁচানোর আকুতি জানাচ্ছিলেন।”
চিকিৎসক আহমদ শাহরিয়ার বলেন, হামলাকারীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারি মিতসুবিসি আউটল্যান্ডার গাড়িটি পুড়িয়ে দেয়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটিও ভাঙচুর করে।
তিনি জানান, সিভিল সার্জনসহ বিভাগীয় কর্মকর্তারা শনিবার হাসপাতালটি পরিদর্শন করেছেন।