আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের প্রথম সভায় তাকে পরের সংসদের স্পিকার পদের জন্য চূড়ান্ত করা হয়।
Published : 10 Jan 2024, 09:36 PM
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নতুন সংসদেও একই দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন।
এ নিয়ে টানা চতুর্থবার জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে তাকে মনোনীত করেছে আওয়ামী লীগ।
বুধবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের শপথের পর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের প্রথম সভায় তাকে পরের সংসদেরs স্পিকার পদের জন্য চূড়ান্ত করা হয়।
একই সভায় সংসদ নেতা, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ উপনেতা, চিফ হুইপ ও সংসদীয় দলের সেক্রেটারি পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় টানা চতুর্থ মেয়াদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বসম্মতিক্রমে দ্বাদশ সংসদের সংসদীয় দলের সভায় সংসদ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে টানা চতুর্থ এবং পঞ্চমবারের মতো সংসদ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরীকে আবার দ্বাদশ সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে নির্বাচন করেছে দলটি।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু পুনরায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে মনোনীত হয়েছেন।
দ্বিতীয়বারের মতো চিফ হুইপ এবং তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি হিসেবে নূর ই আলম চৌধুরী মনোনীত হয়েছেন।
এদিন দ্বাদশ সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথমে শপথ নেন স্পিকার শিরীন শারমিন।
বুধবার সকাল ১০টায় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে নতুন এমপিদের শপথ অনুষ্ঠানের শুরুতেই নিজের কাছে নিজে শপথ নেন রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত এই জনপ্রতিনিধি।
পরে শিরীন শারমিন শপথপত্রে সই করেন এবং একাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে তিনি নবনির্বাচিত বাকি এমপিদের শপথ পড়ান।
২০০৯ সালে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য হিসাবে জাতীয় সংসদে আসেন শিরীন শারমিন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ২০১৩ সালে ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম নারী স্পিকার নির্বাচিত হন তিনি।
এরপর ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছেড়ে দেওয়া রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসন থেকে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসেন স্পিকার শিরীন শারমিন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা তার শ্বশুরবাড়ির এলাকা পীরগঞ্জের আসনটি নোয়াখালীর মেয়ে শিরীনকে ছেড়ে দেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও এ আসনে শিরীন শারমিনকে প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ।
ভোটের আগে পীরগঞ্জে নির্বাচনী জনসভায় শিরীনের পক্ষে ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই যে আমার মেয়েকে আপনাদের দিয়ে গেলাম। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করা মানে আমাকে ভোট দেওয়া, জয়কে (সজীব ওয়াজেদ জয়) ভোট দেওয়া। সে জয়ের বোন, পুতুলের (সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) বোন।”
পেশায় আইনজীবী শিরীন শারমিনের জন্ম ১৯৬৬ সালে ৬ অক্টোবর ঢাকায়। তার বাবা রফিকউল্লাহ চৌধুরী ছিলেন স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব।
তার মা অধ্যাপক নাইয়ার সুলতানা বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সদস্য ছিলেন। তার নানা সিকান্দার আলী ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান হাই কোর্টের বিচারপতি।
১৯৮৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল এল বি (অনার্স) এবং ১৯৯০ সালে ওই স্থান অটুট রেখেই এলএলএম ডিগ্রি নেন শিরীন শারমিন। ২০০০ সালে এসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন।
১৯৯২ সালে বার কাউন্সিলের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন শিরীন। ১৯৯৪ সালে হাই কোর্ট বিভাগ ও ২০০৮ সালে আপিল বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হন। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আইনজীবীদের একজন তিনি।
শিরীন শারমিনের স্বামী ওষুধ শিল্পের পরামর্শক সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন। তাদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে।