প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের জন্য ২৯ নভেম্বরের তারিখ ধরে প্রস্তুতি সারা হলেও সেই তারিখ পরিবর্তন হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার ঢাকা সফররত জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই শুনসুকের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
সফরের বিষয়ে এক প্রশ্নে শাহরিয়ার আলম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সফরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা কিন্তু আমরা এখনো পর্যন্ত দিইনি। আপনারা জানেন যে, ডিপ্লোম্যাসিতে অনেক কিছু থাকে, সুবিধা-অসুবিধা থাকে, যে কারণে শেষ মুহূর্তেও পরিবর্তন হয়। সে কারণে সবসময় যে কার্টেইন রেইজারটি হয়, সেটা আমরা একেবারে যথাযথসম্ভব সর্বশেষ মুহূর্তে করি।
“তবে, এই সফরটি শিগগিরই হবে, নতুন তারিখে এটি হবে। একটি তারিখ হয়ত আপনারা বিভিন্ন জায়গা থেকে শুনেছেন, সে তারিখে বর্তমান প্রেক্ষিতে এটা হচ্ছে না। তবে খুব শিগগির হবে।”
২৯ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্ভাব্য সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর। গত ২৭ অক্টোবর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও প্রধানমন্ত্রীর সফরের সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ওই সময়ের কথা জানানো হয়েছিল।
এর মধ্যে ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশেনের (আইওআরএ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে আসা জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর নতুন তারিখ হবে বলে জানালেন শাহরিয়ার আলম।
কী কারণে সফর পেছানো হল, তা স্পষ্ট না করে তিনি বলেন “আমাদের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল আছে, সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি, যেগুলো আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের সফরে স্বাক্ষর হবে।”
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের বিষয় বৈঠকে এসেছে কি-না, সেই প্রশ্নে শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাকে একটি কথা বলেছি যে… আমরা আন্তর্জাতিক কিছু নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি, যেখানে জাপান বাংলাদেশের সহযোগিতা চেয়েছে; একাধিক পদে ব্যক্তিগত এবং রাষ্ট্র হিসাবে জাপানের…।
“তখন আমি তাকে একটু হালকা মেজাজে বা হালকা ভাষাতেই বলেছি যে, বাংলাদেশে নির্বাচন… ওটাতো একটি নির্বাচন, আন্তর্জাতিক নির্বাচন… নির্বাচন বললে মানুষ মনে করতে পারে স্থানীয় নির্বাচন, এটা আমাদের একেবারে আভ্যন্তরীণ ও একান্ত বাংলাদেশের জনগণের বিষয়।”
জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তখন ‘উপর-নিচে মাথা নেড়েছেন’ জানিয়ে শাহরিয়ার বলেন, “তিনি সেটাতে নড করেছেন যে, হ্যাঁ, নির্বাচন বাংলাদেশের নিজেদের বিষয়।”
পুরনো খবর:
সফর পেছানোর সিদ্ধান্ত জাপানের দিক থেকে, নাকি বাংলাদেশের দিক থেকে হল, সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও।
তবে জাপান সরকারের তিনজন মন্ত্রীর পদত্যাগ এবং সে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে তিনি কারণ হিসাবে দেখিয়েছেন।
ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আইওআরএ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আপনি দেখেছেন যে, জাপানে বর্তমান সরকারের তিন-তিন জন মন্ত্রী ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন।… আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
“তারা আমাদের দাওয়াত দিয়েছেন। আর এই সময় তাদের নিজেদের ঘরে যদি সমস্যা থাকে, তাহলে… সেজন্য আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। দেখি অবস্থা যদি খুব … তাহলে আমাদের অবজেকটিভ অনেক কিছু, সেগুলো কীভাবে অর্জিত হবে, সেসব বিবেচনায় আমরাই চিন্তাভাবনা করছি।”
জাপানে কোভিড পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জাপানে এখনো প্রকোপ আছে। সবাইকে কোয়ারেন্টিন করতে হয়। শুধু কোয়ারেন্টিন না, রেস্ট্রিক্টেড মোবিলিটি।
“আমাদেরতো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গেলে বিরাট সৌন্দর্যের জন্য যান, বড় ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল যাবেন। এরা আবার কোয়ারেন্টিনের ঝামেলায় পড়েন কি-না। একাধিক বিবেচনায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”