প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন টোকিও সফরে দুই দেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান জাপানের রাষ্ট্রদূত।
Published : 14 Nov 2022, 06:11 PM
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে এবং প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল অংশ নেবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।
সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এবং ফ্রেডরিক-এবার্ট-স্টিফটুং, বাংলাদেশের (এফইএস, বাংলাদেশ) যৌথ আয়োজনে ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে এই প্রত্যাশার কথা জানান জাপানের রাষ্ট্রদূত।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইতো নাওকি বলেন, “জাপান দূতাবাস ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময়ও উদ্বেগ জানিয়েছিল। আমি জাপান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করছি। সুতরাং, আমি একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন এবং সরকার কাজ করছে।
“আমি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন অহিংস, শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ হওয়ার প্রত্যাশায় রয়েছে জাপান।”
ইতো নাওকি বাংলাদেশে ভোটার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে অর্থায়নে তার দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান।
এ বছরের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সূচি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত নাওকি বলেন, “এই সফরে বাংলাদেশ-জাপান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
বাংলাদেশ-জাপান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পর্কে তিনি বলেন যে, এই ধরনের চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে নতুন পরিকল্পনা এবং কাঠামো তৈরি করতে হবে।
এ জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণের ওপর জোর দেন তিনি।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপান সরকার মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনার চেষ্টা করছে।
তবে মিয়ানমারের শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গাদের দক্ষতার উন্নয়ন ছাড়া এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
জাপান-বাংলাদেশ সামরিক এবং নিরাপত্তার সুসম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগের জন্য আড়াইহাজার উপজেলায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুবিধা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ইতো নাওকি।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে জাপান যা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশেষভাবে সহায়ক বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সিজিএস চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, “জাপানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীর এবং বন্ধুত্বপূর্ণ।”
মুক্তিযুদ্ধে জাপানের নাগরিকদের সমর্থনের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এফইএস, বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সাধন কুমার দাস বাংলাদেশ ও জাপানের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতার নানা দিক তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।