ইজিবাইক ও নসিমন-করিমন নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদে বলেছেন, নীতিমালা চূড়ান্ত হলেই এসব যানবাহন অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রোববার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের এমপি বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে বিকালে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
মন্ত্রী বলেন, দেশে বিআরটিএ অনুমোদিত গাড়ির সংখ্যা ৫৫ লাখ ৮২ হাজার ৩১০টি (৩১ ডিম্বের ২০২২ পর্যন্ত)। বর্তমানে অনুমোদনবিহীনভাবে ইজিবাইক, নসিন, করিমন, ভটভটি প্রভৃতি যানবাহন রাস্তায় চলাচল করছে।
“এ ধরনের যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। নীতিমালা চূড়ান্ত হলে এ ধরনের যানের অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”
গত কয়েক বছর ধরে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের তালিকায় উপরের দিকে থাকছে মোটর সাইকেল এবং নসিমন, করিমন, অটোরিকশার মত তিন চাকার বাহন।
দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০১৫ সালের অগাস্ট মাসে দেশের ২২টি মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। হাই কোর্টও এ ধরনের বাহন বন্ধের বিষয়ে একাধিকার নির্দেশ দিয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজে সে সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মহাসড়ক থেকে তিন চাকার বাহনের উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেন। কিন্তু মহাসড়কে এসব বাহনের চলাচল থামেনি।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের গত নভেম্বরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেল বন্ধ না করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণের ওপর সরকার জোর দিচ্ছে। দেশে আপাতত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার চলাচল নিবিড়ভাবে পর্যবক্ষণ করা হবে। সে লক্ষ্যেই নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে।
অবস্থান পরিবর্তনের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি সেদিন বলেন, “মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার চেয়ে নিয়ন্ত্রণটা কীভাবে করা যায়, আমরা সে ব্যাপারে গুরুত্বটা বেশি দিচ্ছি। জনবহুল দেশে এটি বহু বেকারের কর্মসংস্থান। আমরা নীতিমালা করার কথা অলরেডি বলেছি। নীতিমালা হচ্ছে।”
সরকারি দলের আরেক এমপি এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে রোববার দেশের সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র সংসদের সামনে তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ, বিষয়টি ‘সত্য নয়’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২০ সালে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ র্যাংকিং’ অনুসারে ১৮৩টি দেশের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হারে বাংলাদেশের অবস্থা ৮৮তম (মৃত্যু হার এক লাখে ১৬ দশমিক ৭৪ জন)। আর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও ভারতের অবস্থান যথাক্রমে ৭২, ৮২, ৮৫ ও ৯০তম।
সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদার করা, দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএ’র নির্দেশনা অনুযায়ী বিআরটিস'তে কর্মরত সব চালকের পর্যায়ক্রমে ডোপ টেস্ট (মাদক পরীক্ষা) কার্যক্রমও চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।