“লড়াইটা নিজেদের মধ্যে হয়েছে, সমস্যা কী? জনগণের জন্য আমরা অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছি, তাদের প্রার্থীতা বাছাইয়ের জন্য,” বলেন তিনি।
Published : 08 Jan 2024, 02:19 AM
এবারের ভোটে বেশি সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়কে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নির্দেশক হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
ঢাকা-১ আসন থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী বলেন, “জনগণ যাদের যোগ্য মনে করেছে, তাদেরকেই নির্বাচিত করেছে। এত স্বতন্ত্র জিতেছে মানে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে।”
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ঘটনাপ্রবাহ, ফলাফল ও বিশ্লেষণ নিয়ে রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন সালমান এফ রহমান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী সালমা ইসলাম।
নৌকা প্রতীকে সালমান পেয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজার ৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকে সালমা পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৯৩০ ভোট।
২০১৮ সালের ভোটেও সালমান এ আসনে হারিয়েছিলেন সালমাকে।
ভোট চলাকালে এ আসনে লাঙ্গল প্রতীকের এজেন্টদের ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন সালমা ইসলাম।
অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সালমান এমন কিছু হয়নি দাবি করে বলেন, "আসলে এই অভিযোগগুলোর কোনো প্রমাণ উনি দিতে পারেন নাই। উনি অনেক জায়গায় এজেন্ট দিতেই পারেন নাই।
“অনেক জায়গায় যমুনা টেলিভিশন ও যুগান্তরের কর্মকর্তাদেরকে এজেন্ট সাজিয়েছেন। যমুনা গ্রুপে যারা চাকরি করেন, আমাদের এলাকার ভোটার তাদেরকে পোলিং এজেন্ট বানানো হয়েছে।”
এলাকায় জনগণের জন্য কাজ করেছেন বলেই তিনি বিজয়ী হয়েছেন বলে মনে করেন সালমান এফ রহমান।
ভোট ‘খুবই ভালো’ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “ঢাকা-১ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। যে মার্জিনে আমি বিজয়ী হয়েছি, এটা আগে থেকেই আমি আশা করেছিলাম। উনিও কাজ করেছেন এলাকায়, আমিও কাজ করেছি। এখন ভোটাররাই বিচার করেছে।”
সার্বিকভাবে ভোট কেমন হয়েছে, এমন প্রশ্নে সালমান বলেন, “উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে। এবার নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত যে কথাগুলো বলেছে, প্রায় এক বছর ধরে বলছে, সরকার থাকতেছে না। নির্বাচন হতে দেবে না। আমি মনে করি শুধু ঢাকায় নয়, সারাদেশে ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে।
“নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোটার টার্নআউট হয়েছে। তাহলে তো প্রতিদ্বন্ধিতামূলকই হয়েছে। লড়াইটা নিজেদের মধ্যে হয়েছে, সমস্যা কী? জনগণের জন্য আমরা অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছি, তাদের প্রার্থিতা বাছাইয়ের জন্য।”
নির্বাচন পরবর্তী বিদেশিদের চাপের বিষয়ে কোনো উদ্বেগ নেই বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “নির্বাচন পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ তারা নেবে বলে আমার মনে হয় না। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা বলেছেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে।”
বিএনপির বর্জনের ভোটে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগে আওয়ামী লীগের নেতারাই নৌকার বিরুদ্ধে লড়ে জয় পেয়েছেন অনেক আসনে। সংসদের বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ে স্বতন্ত্রদের অনেক বেশি আসনে জয়ের খবর এসেছে।
অনুষ্ঠানে ‘সংসদে বিরোধী দল কে হবে’? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নে সালমান বলেন, গত ১০ বছরে ভারতে বিরোধী দল কে? গত ১০ বছরে ভারতে লিডার অব অপজিশন নাই। যেহেতু ওদের নিয়ম আছে, লিডার অব দ্য অপজিশন হতে হলে মিনিমান ১০ শতাংশ সিট থাকতে হবে। কংগ্রেসের কিন্তু ১০ শতাংশের কম সিট আছে।
“জাতীয় পার্টি যদি ছয়টি আসন পেয়ে থাকে, তাহলে তারা বিরোধী দলের রোল প্লে করবে। স্বতন্ত্ররা কী করবে সেটা তো আমি এখন বলতে পারি না।”