আগামী বছর ভোটার বাড়বে প্রায় ৩০ লাখ। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা সাড়ে ১১ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
Published : 23 Nov 2022, 08:55 PM
এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদে ১৫-১৭ বছর বয়সী এবং ভোটারযোগ্য বাদ পড়া মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন।
এর মধ্যে ২০২৩ সালে প্রায় ৩০ লাখের মতো নতুন যারা ভোটার তালিকাভুক্ত হবে, তারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। বাকিরা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৭০ লাখের মতো ভোটার যুক্ত হবে।
২০ মে থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশজুড়ে চার ধাপে ভোটারযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ চলে। এসময় বর্তমান ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে মৃতদের তথ্য সংগ্রহও করা হয়েছে; এবার মৃত ভোটারের সংখ্য প্রায় ২০ লাখের মতো।
মধ্য ডিসেম্বরে হালনাগাদের নতুন ভোটারদের ছবি তোলা, ১০ আঙ্গুলের ছাপ, আইরিশসহ বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শেষ হবে।
হালনাগাদ চলাকালে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার অভিযোগে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ পাঁচটি এলাকায় মামলা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “মাঠ পর্যায়ে একীভূত তথ্য অনলাইনে সব সময় আপডেট করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১ কোটির মতো ভোটারযোগ্য নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ছবিসহ সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। এরপর খসড়া তালিকা ও চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রকৃত ভোটার নিশ্চিত হবে।”
তিনি জানান, প্রতিবছর ২.৫ শতাংশ হারে নতুন ভোটার যুক্ত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তিন বছর মিলিয়ে এবার তথ্য সংগ্রহে ‘টার্গেট’ ছাড়িয়েছে। তিন বছরের (১৫-১৭ বছর) অনেকের তথ্য নেওয়া হলেও ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকায় যারা যুক্ত হবে, তারাই আগামী দ্বাদশ সংসদ ভোট দিতে পারবেন।
সবশেষ ২০২২ সালের ২ মার্চ দেশের মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। ভোটার হওয়া চলমান প্রক্রিয়া থাকায় বর্তমানে এখন ভোটার সংখ্যা আরও কয়েক লাখ বেশি রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নতুনদের যুক্ত করে ও মৃতদের বাদ দিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ১১ কোটি ৬০ লাখের মতো হতে পারে।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহ ও কর্তনের তথ্য সংগ্রহ শুরু হয় ২০ মে
নিবন্ধন কেন্দ্রে বায়োমেট্রিক গ্রহণ ও বাদ পড়া ভোটারের নিবন্ধন চলে ১০ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর
স্থানান্তর আবেদন ও মৃত ভোটারের নাম কর্তন ১১ জুন থেকে ১৫ ডিসেম্বর।
খসড়া তালিকার পিডিএফ প্রস্তুত ২২-২৮ ডিসেম্বর
২ জানুয়ারি হালনাগাদ তালিকার খসড়া প্রকাশের পর দাবি, আপত্তি, সংশোধন শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ২ মার্চ।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নতুন ভোটার হবে সোয়া কোটি
সবশেষ ২০১৯ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদের কাজ চলে। সে সময় চার বছরের (২০০১-২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম) তথ্য একসঙ্গে নেওয়া হয়; নতুন প্রায় ৯৬ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মৃত ১৫ লাখ ভোটার বাদ পড়ে।
এবার তিন বছরের ২০০৫-২০০৭ বা তার আগে যাদের জন্ম, সেসব নাগরিকদের তথ্য নেওয়া হল।
ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, নভেম্বর পর্যন্ত ভোটার রয়েছে (প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী) ১১ কোটি ৪৫ লাখের বেশি।
এবার তথ্য সংগ্রহ হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ ১৪ হাজার ৩০৪ জনের। এরমধ্যে পুরুষ ৫২ লাখ ৮২ হাজারের মতো এবং নারী ৪৯ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি, আর হিজড়া দুই সহস্রাধিক।
তথ্য সংগ্রহ হলেও বায়োমেট্রিক না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে অনুপস্থিত ১১ লাখ ২৭ হাজার ২৮৩ জন।
মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ হয়েছে ২০ লাখের মতো। এর মধ্যে পুরুষ ১১ লাখ ৮২ হাজার ২৩ এবং নারী ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৪৭৩।
মৃতদের বাদ দেওয়ার পাশাপাপাশি নতুনদের নিয়ে বর্তমান ভোটার তালিকায় ৩০-৩২ লাখ নতুন যুক্ত হতে পারেন বলে ধারণা করছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪১ লাখ।
২০১৯ সালে হালনাগাদ শেষে নতুন যোগ ও মৃতদের বাদ দিয়ে মিলিয়ে এখন ভোটার ১১ কোটি ৩২ লাখের বেশি।
২০২৩ সালে নতুনদের যুক্ত ও মৃতদের বাদ দিয়ে ভোটার হতে পারে ১১ কোটি ৬০ লাখের মতো।
ফলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১ কোটি ২০ লাখের মতো হবে নতুন ভোটার, যারা প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে ভোট দেবে।