সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী:  বিশেষ অধিবেশন বসছে ৬ এপ্রিল

বাংলাদেশের প্রথম সংসদের অধিবেশন বসেছিল ১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2023, 01:06 PM
Updated : 21 March 2023, 01:06 PM

জাতীয় সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

আগামী ৬ এপ্রিল বেলা ১১টায় চলতি সংসদের ২২তম এই অধিবেশন বসবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মঙ্গলবার এ অধিবেশন আহ্বান করেছেন।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সংসদ সংসদ কক্ষে একাদশ জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশন এবং সংসদের ৫০ বছর পূর্তি 'সুবর্ণ জয়ন্তী' উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশন বসবে।

গত একবিংশ অধিবেশনের শুরুতে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে সংসদের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে এপ্রিলে বিশেষ অধিবেশন করার এ সিদ্ধান্ত হয়। চলতি সংসদের ২১তম অধিবেশন ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর শুরু হয়েছিল জাতীয় সংসদের যাত্রা। প্রথম সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ। পরে ৭ এপ্রিল বসে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন।

প্রথম সংসদের নেতা ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমান। প্রথম সংসদের স্পিকার ছিলেন মোহাম্মদউল্লাহ। তিনি পরে রাষ্ট্রপতি হলে সংসদের সভাপতির আসনে বসেন আব্দুল মালেক উকিল।

প্রথম সংসদ গঠিত হওয়ার প্রথম অধিবেশনে সংসদের আসন ছিল ৩০০টি। আর সংরক্ষিত নারী আসন ছিল ১৫টি, যা বর্তমানে ৫০টি।

আন্দোলনের নানা পটভূমিতে ৭১ এর রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধু। এরপর শুরু হয় দেশ গঠনের কাজ।

শুরুতেই গণপরিষদের মাধ্যমে রচিত হয় স্বাধীন দেশের সংবিধান। যার মাধ্যমে স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ওই নির্বাচনে ২৯৩ আসন পায় আওয়ামী লীগ। বাকি সাতটির মধ্যে পাঁচটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জেতে। জাসদ একটি এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ আরেকটি আসতে জিতেছিল । ওই সংসদে কোনো বিরোধীদলীয় নেতা ছিল না।

প্রথম সংসদের প্রথম বৈঠকের দিন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর তাদের অভিনন্দন জানাতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমরা যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছি, সে ইতিহাসে যেন খুঁত না থাকে। দুনিয়ার পার্লামেন্টারি কনভেনশনে যেসব নীতিমালা আছে, সেগুলো আমরা মেনে চলতে চাই। সঙ্গে সঙ্গে যেন এমন একটি পার্লামেন্টারি প্রসিডিওর ফলো করতে পারি, যাতে দুনিয়া আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।

“এখানে কোনো দল বা মতের নয়- এখানে এই দেখব যে, প্রত্যেক সদস্য যেন যার যে অধিকার আছে, সে অধিকার ব্যবহার করতে পারেন। সেদিকে আপনিও (স্পিকার) খেয়াল রাখবেন বলে আমি আশা পোষণ করি। এ সম্পর্কে আপনি আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা পাবেন। ‘পার্লামেন্টারি ট্রাডিশন’ পুরোপুরিভাবে ফলো করতে আমরা চেষ্টা করব।”

সংসদ নিয়ে নিজের আবেগ প্রকাশ করে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী প্রস্তাব পাস হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “… আজ আপনারা ‘কন্সটিটিউশন’ সংশোধন করে আমাকে প্রেসিডেন্ট করে দিয়েছেন। আমার তো ক্ষমতা কম ছিল না। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমস্ত ক্ষমতা আপনারা দিয়েছিলেন।

“আমার দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি দরকার, তা আমার আছে। মাত্র ৭ জন ছাড়া সমস্ত সদস্যই আমার। তবু আপনারা ‘এমেন্ডমেন্ট’ করে আমাকে প্রেসিডেন্ট করেছেন। এই সিটে আমি আর বসব না- এটা কম দুঃখ না আমার। আপনাদের সঙ্গে এই হাউসের মধ্যে থাকব না-এটা কম দুঃখ নয় আমার।”

Also Read: সংসদের ইতিহাসে প্রথম বিশেষ অধিবেশন শুরু

Also Read: শেষ হল সংসদের ২১তম অধিবেশন