“প্রিজাইডিং অফিসারকে আমরা বলেছি, আপনি লক্ষ্য রাখবেন নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার হচ্ছে কিনা। যদি দেখেন হচ্ছে না, যে কারণে ফেয়ার হচ্ছে না, সেটাকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবেন। যদি না পারেন, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটকে খবর দিন। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট এসে সহায়তা করবে। এরপরও না হলে তাহলে লিভ দ্য পোলিং স্টেশন। পরে নির্বাচন হবে ওখানে।”
Published : 26 Oct 2023, 07:33 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে না হলে পুরো দেশে ভোট বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনে গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মত বিনিময়ের শেষ পর্যায়ে দ্য ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে প্রশ্ন করেন, “আপনি প্রিজাইডিং অফিসারকে বলেছেন যে, যদি নির্বাচন ঠিক মত না হয়, তাহলে লিভ ইট। হোয়াট উইল হ্যাপেন? সারাদেশে যদি নির্বাচন ঠিকমত না হয়, তাহলে আপনি কী করবেন?
জবাবে সিইসি বলেন, “না আমার করার কিছু নাই। নির্বাচন হবে না। পুরো দেশের নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাবে, আবার হবে। ওই সেন্টারে বন্ধ হয়ে যাবে, আবার করবেন। উই হ্যাভ টু বি ক্যারিজিয়াজ, উই হ্যাভ টু ডু দ্যাট।"
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনীর প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট কেন্দ্রে অনিয়ম, প্রতিরোধে ভোটগ্রহণ বন্ধ করার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে প্রিজাইডিং অফিসারকে।
এ বিষয়ে সিইসি বলেন, “আমরা কত বড় একটা বিধান এখানে এনেছি। যেহেতু প্রিজাইডিং অফিসার তার সেন্টারের প্রধান, তার গুরুত্ব অনেক, আমিও যদি ভেতরে যাই আমি তাকে অবহিত করে যাব। আমারও বস তখন তিনি। তিনি ওই সেন্টারের প্রধান।
“প্রিজাইডিং অফিসারকে আমরা বলেছি, আপনি লক্ষ্য রাখবেন নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার হচ্ছে কিনা। যদি দেখেন হচ্ছে না, যে কারণে ফেয়ার হচ্ছে না, সেটাকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবেন। যদি না পারেন, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটকে খবর দিন। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট এসে সহায়তা করবে। এরপরও না হলে তাহলে লিভ দ্য পোলিং স্টেশন। পরে নির্বাচন হবে ওখানে।”
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আমরা প্রিজাইডিং অফিসারকে বলেছি, পোলিং স্টেশন ত্যাগ করে যেন চলে না যান, সেটা ক্রিমিনাল অফেন্স হবে। যেহেতু নির্বাচন হচ্ছে না, নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত হয়ে যাবে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হচ্ছে না, নির্বাচন করার প্রয়োজন নেই, এটা আমরা বিশ্বাস করি। কাজেই নির্বাচন বন্ধ করে দিন। চলে আসুন। আপনাকে ধিক্কার দেয়া হবে না, আপনি প্রশংসিত হবেন।”
নির্বাচন গণতান্ত্রিক ও পেশী শক্তিবিহীন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা কিচ্ছু চাই না। ভোটারদের তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে হবে।
“আমি যদি সার্টিফিকেট দেই, নির্বাচন ফেয়ার- তাতেই কিন্তু হবে না। এটা ট্রান্সপারেন্সি ও ভিজিবল হতে হবে। আর এখানে রোল প্লে করতে হবে মিডিয়াকে। এখানে মিডিয়াকে ভূমিকা রাখতে হবে। এজন্য আপনাদের কাছে আমরা দ্বরস্থ হয়েছি। আমরা সকলের সাহায্য চাই।”
নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে চান জানিয়ে সিইসি বলেন, “আজকের জন্য না, ভবিষ্যতের জন্য নির্বাচন হয়ে গেলে এরপরও আন্দোলন চলবে- এটা আমরা চাই না। আমি সব সময় বলেছি, আমাদের আইন অনুযায়ী নির্বাচন সঠিক সময়ে করব। এখনও বলছি সঠিক সময়ে নির্বাচন করব।”
রাজনৈতিক দলকে ‘কম্প্রোমাইজ’ করার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, “আমাদের আহ্বান থাকবে আপনারা কমপ্রোমাইজ করুন। আমি কিন্তু কখনও কারও প্রশংসা করিনি। আপনারা যে রাজপথে শক্তি দেখাচ্ছেন, মারামারি, এরকম কখনও কিছু আমি বলিনি। যেটা বলেছি, রাজপথে শক্তি প্রদর্শনের চেয়েও যদি চায়ের টেবিলে বসা যায় সেটা।
“প্রতিদিনই সংবাদে দেখছি কেউ না কেউ বলছেন, সংলাপের বিকল্প নেই। এ জিনিসটার জন্য চেষ্টা করে যাব। বার বার আমি সমন্বিত প্রয়াসের কথা বলেছি। প্রত্যেকটা সেগমেন্ট আমাদের সঙ্গে যদি সমন্বয় না করে, তাহলে হবে না।”