‘নদী দূষণের জন্য ওয়াসার এমডি-ঢাকা উত্তরের মেয়রের জেলে যাওয়া উচিৎ’

নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানের অভিযোগ, ঢাকা ওয়াসা ও উত্তর সিটি করপোরেশন তাদের কোনো কথাই শোনে না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2022, 02:43 PM
Updated : 25 Sept 2022, 02:43 PM

ঢাকার আশপাশের নদী দূষণের জন্য ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের কারাদণ্ড হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী।

বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায়ও তিনি এই ধরনের বক্তব্য দেন।

পরে জানতে চাইলে মঞ্জুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিদিন ঢাকা শহরের মানুষ প্রায় ৪৫ লাখ কেজি মল ও ১৫০ কোটি লিটার মূত্র উৎপাদন করে। ঢাকা ওয়াসা এগুলো শোধন করছে না, আর সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পানি নিষ্কাশন নালার মাধ্যমে নদ-নদীতে দেওয়া, কিন্তু তারা কেউ শুনছে না।

“মার্চের ১৬ তারিখ থেকে বলতেছি। কিন্তু তারা শোনে না। এই জন্য আজকে বলতে বাধ্য হয়েছি যে, সংস্থার প্রধান হিসেবে তারা জেল খাটবে। বাধ্য হয়েছি এসব কথা বলতে। তারা কোনো কথাই শোনে না।”

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ‘চেষ্টা করছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কিন্তু উত্তর সিটি করপোরেশন কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। বিভিন্ন মিটিংয়ে ডাকলে উত্তর সিটি করপোরেশন ছোট একজন অফিসার পাঠিয়ে দেয় সভায়, যে কি না কিছুই বোঝে না এবং কিছুই বলতে পারে না।”

নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান নদীতে পলিথিন-প্লাস্টিক দূষণ কমানো নিয়ে বলেন, “নদীতে পানি যাওয়ার আগে যদি বাঁশ বেঁধে দেওয়া হয়। তাহলে প্লাস্টিক, পালিথিনগুলো যদি আটকানো যায় এবং পরে সরিয়ে দেওয়া যায়, তবুও তো নদীটা বাঁচে। শোনেই না, সমস্যাগুলো শোনেই না।”

ওয়াসার দায় নিয়ে নদী রক্ষা কমিশনের মঞ্জুর বলেন, “ওয়াসা হল নাম্বার ওয়ান ‘পলিউটার’ (দূষণকারী)। ওয়াসা বিভিন্ন স্থানে বলে আমি নাকি তাদের দুর্নাম করি। আমার উপর দায়িত্ব হচ্ছে নদীকে রক্ষা করা। এই মানুষের মল-মূত্র যাচ্ছে নদীতে। পরীক্ষা করালে দেখা যায় প্রচুর মল মূত্রের ব্যাকটেরিয়া। আমি কি তাদের বলব না?

“একই অপরাধে পটুয়াখালীর মেয়ারকে ছয় মাস আমি জেলও দিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু পরে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়েছে।”

উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “খাল নিয়ে তারা বিশাল বিশাল প্রজেক্ট করতেছে। কিন্তু আইন হচ্ছে পানিতে-নদীতে প্রজেক্ট করতে হলে আমাদের এনওসি নিতে হবে। আমরা তাদের চিঠি দিই, এখানে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থাকবে কি না জানাতে, কিন্তু তাদের কোনো ‘রেসপন্স’ নেই।”

নদী দখল এবং দূষণ রোধসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে গঠিত বিধিবদ্ধ সংস্থা জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। সরকার এই কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ দেয়।