দুই জঙ্গি ছিনতাই: পাঁচ পুলিশ বরখাস্ত

কোর্ট হাজতের দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ সদস্যও আছেন এই পাঁচজনের মধ্যে।

আদালত প্রতিবেদকজ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2022, 07:31 AM
Updated : 21 Nov 2022, 07:31 AM

ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

মহানগর পুলিশের অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ কমিশনার জসীম উদ্দীন সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।

সাময়িক বরখাস্তরা হলেন- সিএমএম আদালতের হাজতখানার কোর্ট ইন্সপেক্টর মতিউর রহমান, হাজতখানার ইনচার্জ এসআই নাহিদুর রহমান, আসামিদের আদালতে নেওয়ার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এটিএসআই মহিউদ্দিন, কনস্টেবল শরিফুল হাসান ও কনস্টেবল আব্দুস সাত্তার।

রোববার ভরদুপুরে পুরান ঢাকার জনাকীর্ণ আদালত থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) নেতা মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের সহযোগীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীর ভাষ্য অনুযায়ী, সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল শুনানি শেষে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশের দিকে ‘স্প্রে মেরে’ তাদেরকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

শামীম ও সিদ্দিক দুজনই প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলাতেও আবু সিদ্দিক সোহেলের ফাঁসির রায় হয়েছে।

এ ঘটনায় ঢাকার পুলিশ কমিশনার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। পলাতক দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিলে ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ। সারাদেশে জারি করা হয়েছে ‘রেড অ্যালার্ট’।

দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলাও করেছে পুলিশ; ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ জনকে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতা সেনাবাহিনীর বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের নির্দেশে জঙ্গিরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী দুটি মোটরসাইকেলে অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন সদস্য অবস্থান নেয়।

এছাড়া আরও ১০/১২ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য আদালতের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করে। এরপর তারা পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা বাধা দিলে আসামিদের একজন লোহা কাটার যন্ত্র দিয়ে একজন কনস্টেবলের মুখে আঘাত করে বলে এজাহারে জানানো হয়েছে।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- শাহিন আলম, শাহ আলম, বিএম মজিবুর রহমান, সুমন হোসেন পাটোয়ারী, খায়রুল ইসলাম, মোজাম্মেল হোসেন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ, আব্দুস সবুর ও রশিদুন্নবী। এদের মধ্যে আরাফাত ও সবুরকেও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছে।

তবে জঙ্গিরা মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নিতে পারলেও আরাফাত ও সবুরকে ছাড়াতে পারেনি।