ঢাকার এত বায়ু দূষণ লজ্জার: কাদের

সড়কে শৃঙ্খলা না এলে উন্নয়ন খুব একটা কাজে আসবে না বলেই মনে করেন ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2023, 10:11 AM
Updated : 7 Feb 2023, 10:11 AM

ঢাকায় বায়ু দূষণ ‘বিপদজনক’ অবস্থায় পৌঁছেছে মন্তব্য করে দুই মেয়র ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, যে বায়ু দূষণের মোকাবেলা আজ করতে হচ্ছে, তা ‘মনুষ্য সৃষ্ট’।

“আজকে আমাদের লজ্জার ব্যপার, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়ন অর্জনে বিশ্বের বিস্ময়, সেই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়ু দূষণ… খুবই বাজে অবস্থা, বিপদজনক অবস্থা, এটা অত্যন্ত লজ্জার বিষয় এবং এটা অবশ্যই মনুষ্য সৃষ্ট।" 

শীতে বায়ু দূষণের পরিমাণ এমিনেতই বাড়ে। গত কিছুদিনের ধুলা দূষণের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা প্রায়ই শীর্ষে থাকছে। 

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ঢাকা সিটি করপোরশেনের দুই মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কাদের।

তিনি বলেন, “আজকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে রাস্তায় ধুলা, ঠিকমত পানি না দেওয়া…, রাস্তায় প্রতিদিনই পানি দেওয়া দরকার। এই দায়িত্বটা সিটি করপোরেশনের, কোথাও কোথাও করেন। আমি তাদেরকে অনুরোধ করব, দুজনই উদ্যমী মেয়র, তারা যেন এই কাজটি করেন। কারণ আমাদের বায়ু দূষণ… এই জন্য সারা রাজধানীতে পানি ছিটানো দরকার।”

মঙ্গলবার রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ রোড শোতে যোগ দিয়ে কথা বলছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

দূষণ কমাতে যে পরিবেশ মন্ত্রণালয়েরও দায় আছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আশপাশের ইটের ভাটাগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। মাটি থেকে ইট তৈরি করার জ্বালানো পোড়ানো… আমাদের পরিবেশকে দূষিত করছে।

“আমাদের পরিবেশ মন্ত্রণালয় শুধু সার্টিফিকেট দিলে চলবে না। দরকার হলে টিম ওয়ার্ক করতে হবে। আজকে দূষণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিন। ঢাকায় আজকে প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস, এই ছোট শহরটা আমাদের পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে।“

নিয়মনীতি মানার ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের তুলনাও টানেন কাদের।

“ছোট একটা দেশ সিঙ্গাপুর, সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে ধূমপান করতে পারবেন না, আমাদের এখানে গাড়ির হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছে। যেখানে সেখানে সিগারেট টানছে। আজকাল স্কুলের ছেলে-মেয়েরা প্রকাশ্যে সিগারেট টানছে। কোনো ভেদাভেদ নেই। যেখানে সেখানে খুশি হর্ন বাজাচ্ছে, হাসপাতালের সামনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে হর্ন বাজাচ্ছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পরিবহনে শৃঙ্খলা আনা সরকারের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।  

“পরিবহনে শৃঙ্খলা আনা এটা এখন আমাদের টপ প্রায়োরিটি। বিশ্ব ব্যাংক একটা প্রকল্প আমাদের এখানে করছে। এখন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাবে, প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। যা সম্পন্ন করতে পারলে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগের শৃঙ্খলা আমরা অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। তবে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে মানুষের সচেতনতা, জনগণের সচেতনতা।“

শৃঙ্খলা না এলে উন্নয়ন খুব একটা কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। মেট্রো রেলের পিলারে পোস্টার লাগালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

“আজকে মেট্রোরেল এ আমি লক্ষ্য করলাম, মেট্রোরেলের পিলার পোস্টারে ভরে গেছে। এই বিষয়টা বার বার হচ্ছে। মানুষ যদি সচেতন না হয়…। আমি এই খারাপ অভ্যাস থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় আমাদের শাস্তিমূরক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।“

আওয়ামী লীগের পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচি কী জানতে চাইলে দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন আগামী নির্বাচন পর্যন্ত তারা নানা ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

“আমাদের প্রোগ্রাম প্রতিদিনই, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত, আমাদের প্রতিদিনই কর্মসূচি। আমাদের বিভাগ, জেলা-উপজেলা, মহানগর-থানা, ইউনিয়নে প্রয়োজনে ওয়ার্ডে থাকবে। আমাদের কর্মসূচি আমরা নির্বাচন পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে থাকবে। এখানে কারও সাথে পাল্টাপাল্টি নয়, এটা আমাদের কর্মসূচিরই অংশ। আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করছি।“

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, “১৩/১৪ সালে আমরা দেখেছি আগুন সন্ত্রাস, রাস্তার পাশের গাছ কাটা, রেল স্টেশন পুড়িয়ে ফেলা, ভূমি অফিস পুড়িয়ে ফেলা, বিদ্যুৎ স্টেশনে পুড়িয়ে ফেলা এসব আমরা দেখেছি।“

জনগণের জানমাল রক্ষা করা আওয়ামী লীগের ‘দায়িত্ব’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত তাদের দল ‘সতর্ক পাহারায়’ থাকবে।