ডিএনসিসি, রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
Published : 13 Dec 2023, 11:30 PM
ঢাকার গুলশান শপিং সেন্টার ৩০ দিনের মধ্যে গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন-ডিএনসিসি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। রাজউকের পক্ষে ছিলেন খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছরের জুলাইয়ে গুলশান-১ এ অবস্থিত গুলশান শপিং সেন্টার ভেঙে ফেলার নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ‘বাণী চিত্র’ ও ‘চলচ্চিত্র’ নামে দুটি কোম্পানি। ওইদিন আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করে।
“মঙ্গলবার রুলের শুনানি নিয়ে এ শপিং সেন্টার ৩০ দিনের মধ্যে গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।”
২০১৭ সালে ২ জানুয়ারি এ শপিং সেন্টারের পাশের ডিএনসিসি কাঁচাবাজারে ভয়াবহ আগুন লাগে; প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই ঘটনার পর গুলশান শপিং সেন্টারের অগ্নিনিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
ওই বছরের ২৮ মে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গুলশান শপিং সেন্টার পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে ওই ভবনে অগ্নিঝুঁকি সংক্রান্ত ১০টি ত্রুটি ধরা পড়ে। সে সময় ত্রুটি সারানোর জন্য সময় দিয়ে ভবন মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব ত্রুটি সারানো হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এরপর ২০১৮ সালের ১১ জুন ফায়ার সার্ভিস ঘোষণা করে, ভবনটি ‘ব্যবহার উপযোগী নয়’। ওই নোটিসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের কাছে আপিল করেন গুলশান শপিং সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক। ফায়ার সার্ভিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যায় দোকান মালিক সমিতি।
তবে হাই কোর্ট ফায়ার সার্ভিসের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার নির্দেশ দেয়। ২০২১ সালের ২১ জুন আবার ওই ভবন পরিদর্শন করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটির সদস্যরা। তখনও সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।
চলতি বছর ঈদের পর সরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ব্যবসায়ীরা ভবন না ছাড়ায় ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন এবং মাহবুব হাসান গত ১৩ জুলাই গুলশান শপিং সেন্টার সিলগালা করে দেন।
এরপর ওইদিন রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর মোড় অবরোধ করে থাকা ব্যবসায়ীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।
ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা গুলশান-১ নম্বর মোড় সিমেন্টের ব্লক দিয়ে বন্ধ করে দিলে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ওইদিন জুলকার নায়ন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই মার্কেট এরইমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস। পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও বলা হয়েছে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনটি থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।”
তিনি বলেন, গত মাসেও ভবন বন্ধ করতে গেলে ব্যবসায়ীরা এক মাসের সময় নিয়েছিল। কিন্তু তারা সরেননি।
“মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে আজ আমরা গিয়ে সিলগালা করে দিয়েছি। ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ২০০ কোটি টাকার একটা ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। যারা প্রকৃত ব্যবসায়ী তারা কিন্তু ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। কেউ আছেন ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন আবার সেখানে থাকতেও চাচ্ছেন, এরাই বিক্ষোভ করছেন।”