আজাদ মসজিদে হল ইহসানুল করিমের কুলখানি

ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার রাতে মারা যান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম হেলাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2024, 12:05 PM
Updated : 15 March 2024, 12:05 PM

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, প্রবীণ সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিম হেলালের কুলখানি হয়েছে গুলশানের আজাদ মসজিদে।

মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনায় শুক্রবার জুমার নামাজের পর পরিবারের পক্ষ থেকে এই মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান,মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ও বাসসের প্রধান বার্তা সম্পাদক ওমর ফারুকসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং ইহসানুল করিমের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা মোনাজাতে অংশ নেন।

ইহসানুল করিমের ছেলে মঈনুল করিম উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্য বলেন, “আমার বাবা সারা জীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। তাকে ক্ষমা করে দেবেন।”

প্রয়াত প্রেস সচিবের বড় মেয়ে সাবরিনা করিম মোরশেদ আছেন সিঙ্গাপুরে। ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি দেশে আসতে পারেননি। বাবাকে নিয়ে তার পাঠানো একটি বার্তা কুলখানিতে পড়ে শোনানো হয়।

ইহসানুল করিম হেলালের পরিবারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রী শিরিন করিম সবাইকে কুলখানিতে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

গত রোববার রাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইহসানুল করিম হেলাল। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।

ইহসানুল করিমের জন্ম কুষ্টিয়া জেলায়, ১৯৫১ সালের ৫ জানুয়ারি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা করেন। পরে ভারতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর করেন।

তারুণ্যে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া ইহসানুল করিম ১৯৬৭ সালে কুষ্টিয়া সদর মহুকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি তরুণ ছাত্রনেতা হিসেবে সংগঠিত করেন ছাত্রদের।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দেন ইহসানুল করিম। বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ)-এর সদস্য হিসেবে পশ্চিম রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে ১৯৭২ সালে ইহসানুল করিমের কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে পাঁচ বছর তিনি নয়া দিল্লিতে বাসসের ব্যুরো প্রধান ছিলেন।

বিবিসি, পিটিআইসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বাংলাদেশ প্রতিবেদক হিসেবেও কাজ করেছেন ইহসানুল করিম, সহকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘হেলাল ভাই’ হিসেবে।

২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান ইহসানুল করিম। ওই বছরই তাকে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

২০১৫ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ইহসানুল করিমকে। এরপর কয়েক দফা তার মেয়াদ বাড়ানো হয়।

ইহসানুল করিম স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেকে রেখে গেছেন।