এবারে হজের ‘উচ্চ’ ব্যয় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে প্যাকেজ মূল্য সাড়ে চার লাখ টাকা করার দাবি জানিয়ে ঢাকায় মানবন্ধন করেছে একটি সংগঠন।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে 'ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের' ব্যানারে এই মানববন্ধন হয়।
সংগঠনের সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, বিমান ভাড়া কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ট্যাক্স কমিয়ে আনলে হজ প্যাকেজ মূল্য সাড়ে চার লাখ টাকা করা ‘সম্ভব’।
তিনি বলেন “এবছর অতিরিক্ত প্যাকেজ মূল্যের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে হজে যাওয়ার সাহস করছেন না। সরকার প্যাকেজ মূল্য কমালে নিবন্ধনের জন্য বারবার সময় বাড়াতে হত না।“
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।
এ অংক গতবারের চেয়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বেশি, সে কারণে হজের ইচ্ছা পূরণ করতে পারছেন না বলে অনেকেই জানিয়েছেন।
ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এখনও হজের নির্দিষ্ট কোটা পূরণ না হওয়ায় নিবন্ধন সময় চতুর্থ দফা বাড়িয়ে ২১ মার্চ করেছে সরকার।
এদিকে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে পাঠানো ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম শাহীনের সই করা চিঠিতে বলা হয়, “২০২৩ সালের হজের হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা নির্ধারণ করে হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে হজযাত্রী হজ এজেন্সি এবং পত্রপত্রিকাসহ বিভিন্ন মহল হতে প্রতিনিয়তই ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসছে।
“বিমান ভাড়া অতিরিক্ত হওয়ায় এ বছর হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। উক্ত রিট পিটিশনের উপর ১৪ ও ১৫ মার্চ শুনানি হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকেও বিমান ভাড়া কমানোর বিষয়ে মত প্রকাশ করা হয়েছে।”
চিঠিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ধর্ম মন্ত্রণালয়কে সবাই দোষারোপ করছে; কিন্তু বিমান ভাড়াতো আমাদের হাতে নেই। আমরা শুধু অনুরোধ জানাতে পারি। তাই বেসামরিক বিমান ও পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।"
চাঁদ দেখার সাপেক্ষে এবার হজ হতে পারে আগামী ২৭ জুন।
চুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেতে পারবেন ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক লাখ ১০ হাজার ১৫৬ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন।