জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে অসঙ্গতি দেখছেন ৮১ নাগরিক

“সংস্থাটির অনুমান বিভ্রান্তিকর এবং বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে,” বলা হয়েছে তাদের বিবৃতিতে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2023, 04:57 PM
Updated : 11 Nov 2023, 04:57 PM

ঢাকায় বিএনপি-জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন যে বিবৃতি দিয়েছে, সেটির কিছু পর্যবেক্ষণকে ‘তথ্যনির্ভর’ মনে করছেন না দেশের ৮১ নাগরিক।

‘বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক বৃহস্পতিবার তাদের স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে তারা দাবি করেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতি ঘটনার ‘প্রকৃত অবস্থাকে’ প্রতিফলিত করে না।

“বাস্তবে যা ঘটেছে তা সঠিকভাবে বোঝার জন্য আমরা এখানে সেসবের প্রকৃতচিত্র তুলে ধরছি। নির্বিচার অগ্নিসংযোগ, পুলিশ হত্যা, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা এবং ভাঙচুরসহ সকল ধরনের সহিংসতাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিবাদ’ এর অন্তর্ভুক্ত করায় এই বিবৃতিটি (জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন) অপরাধীদেরকে তাদের নৃশংস সহিংস কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে পারে।”

৮১ নাগরিকের এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারকের বাসভবনে হামলাকারী সব দুষ্কৃতকারীকে বিএনপির কর্মী হিসেবে শনাক্ত করা হলেও জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়ের সেই বিবৃতিতে তার প্রতিফলন ঘটেনি।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। থেমে থেমে এ সংঘর্ষ কাকরাইল থেকে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দলটির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।

পরদিনের হরতালেও সহিংসতার ঘটনা ঘটলে এবং দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হলে তিন দিনের অবরোধ ডাকে বিএনপি।

সেসময়কার তিন দিনের পরিস্থিতি নিয়ে ৩১ অক্টোবর বিবৃতি দেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।

Also Read: সাংবাদিকদের ওপর হামলায় ‘ক্ষমতাসীনরাও’, সন্দেহ জাতিসংঘের

সংস্থাটি বলেছিল, “অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক নির্যাতিত হয়েছেন বিক্ষোভকারী এবং মুখোশধারী মোটরসাইকেল আরোহীদের হাতে, ধারণা করা হচ্ছে তারা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক।”    

এ প্রসঙ্গে ‘নাগরিক সমাজ’র বিবৃতিতে বলা হয়, প্রায় ৩৫ জন সাংবাদিককে আহত করার ঘৃণ্য ঘটনা জাতিকে উদ্বিগ্ন করেছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে ইতিমধ্যে এ ঘটনায় জড়িত মুখোশধারী ও অন্য আক্রমণকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে তাদের সুস্পষ্ট যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে মারার ভিডিওর বর্ণনা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “কিছু আক্রমণকারী মুখোশ পরে ছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়ের অনুমান যে, মুখোশ পরা আক্রমণকারীরা ছিল ক্ষমতাসীন দলের লোক। তাদের এই অনুমান বিভ্রান্তিকর এবং বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।”

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএসএমএমইউয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান, অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া, সাবেক সচিব মাসুদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা, অভিনেতা রামেন্দু মজুমদার, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া, অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।